তবে কি ধসে পড়া নাগাদ অপেক্ষা করতে হবে?

2011-09-09-17-34-13-September...........Nine 04
আমাদের মাননীয় প্রধান প্রকৌশলী (এলজিইডি) গতরাতে সরেজমিনে খিলগাঁও ফ্লাইওভার পরিদর্শন করে বুঝলেন যে ভয়ের কিছু নেই–এর সরু একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কোন ফ্র্যাকচার নেই, এমনকি তদন্ত করারও দরকার নেই। বাহ শুনে খুব ভালো লাগলো।

কিন্তু সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা জানালেন ব্রীজের পশ্চিম পাশে (শাহজাহানপুরের কাছে) একটি পিলার ২ ইঞ্চি দেবে যাওয়ায় এর উপর দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে রাত ৮ ৩০ থেকে এবং “এক সপ্তাহ আগে নাকি বিষয়টা টের পাওয়া গেছে”! তারপর শুধুমাত্র ভারী যান চলাচল বন্ধ করা হয়।

শুক্রবার রাতে রাষ্ট্র হলো ব্যাপারটা, ২ ইঞ্চি দেবে গেছে একটা পিলার

বুঝলাম না এক সপ্তাহ আগে কি প্রকৌশলী ওয়াহেদুর রহমান টের পাননি বা তাকে কি জানায়নি খিলগাঁও থানা? নাকি তার কাছে বিষয়টা গুরুত্বপুর্ণ মনে হয়নি। সুযোগ পেলে এই কথাটাই জিজ্ঞেস করবো।

২০০৫ সালের মার্চে ফ্লাইওভারটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এলজিইডি নিজস্ব ডিজাইনার দিয়ে ও তত্বাবধানে ১ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৪ মিটার প্রশস্ত এই উড়াল সেতুটি বানিয়েছে ৮১ কোটি ৭৫ লাখ টাকায়।

নির্মাণের মাত্র ৬ বছরের মাথায় ফ্লাইওভার দেবে গেল কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রাবার বিয়ারিং ক্ষয় হতে পারে। বিয়ারিং ক্ষয়ে গেলে তা পরিবর্তন করা যায়। ৮/১০ বছর পরপর রাবার বিয়ারিং বদলানোর নিয়ম। তবে এটা একটু আর্লি ক্ষয় হয়েছে।” [সূত্রঃ বিডিনিউজ২৪ডটকম]

আবার মানুষ যেন ভয় না পায় সেদিকেও তার খেয়াল আছে। তিনি বললেন আজ রাতেই এটা চালু করা যায়, তবে তারা কাল জানাবেন।

পাশাপাশি “ডিজাইনে কোনো ফেইলিওর হয়নি। অবকাঠামোর কিছু হয়নি। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কোনো ডিজাস্টার হওয়ার আর সুযোগ নেই,” এই বলে বাহবা পেতে চাইলেন তিনগাল!

মনে পড়ে গেল আবুলের কথা!!!

তবে এই চিত্র নতুন নয়। আমাদের দেশে — হোক সরকারী বা ব্যক্তিমালিকানাধীন — সবাই কেমন যেন একটু দেরিতে ব্যবস্থা নেয়। দেবে যাওয়া বা ভেঙ্গে না পড়া নাগাদ হুঁশ হয়না কারো। তার প্রমান বিগত কিছুদিনের মধ্যে ঢাকার কিছু এলাকাইয় দেখা গেছে — বেগুনবাড়ি, নাখালপাড়া আর কাঁঠালবাগানের কথা মনে পড়ে এক মুহুর্তেই।

সমালোচনা, গালি বা মাইর ঠেকাতে মালিকগন বা দেখভাল কর্মীরা চেপে যান অনেক আগামবার্তা, আর না জেনে জীবনের ঝুকি নিয়ে সাধারন মানুষ দিন কাটায়।

কি অদ্ভুত এই দেশ। এদের কোন মায়া নেই অন্যদের প্রতি। অথচ তারা সেই কর্তব্য পালনের জন্যেই আছে, বা রাখা হয়েছে।

এরপর কি হওয়া উচিত? আসলে কি হবে?

আজ থেকেই অন্যান্য ফ্লাইওভারগুলো পরিদর্শন শুরু করবে অন্তত দুই শ্রেণীর লোকেরা — সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিকরা। সাথে ওভারব্রীজ আর সেতুগুলো। ঝুঁকিপুর্ণ স্থানগুলো দেখে কি ব্যবস্থা নেয়া উচিত তা ঠিক করতে কাজে লেগে যাবে কর্মীরা। কর্তারা কর্মচারীদের গালিগালাজ করবে, আর কর্মচারীরা তাদের নিচের কর্মীরা–এভাবেই চলবে মনে হচ্ছে–অতীতের মতো।

একেকটা মানুষের জন্ম থেকে মারা যাবার মুহুর্ত পর্যন্ত তার সবকিছু হিসেব করলে আমাদের বোঝার কথা যে একটা প্রানের মূল্য কতো।

সরকারের কথা নাহয় বাদই দিলাম, আমরা সাধারন মানুষ কি সচেতন? আমরা কি অন্যকে সচেতন করছি?


Posted

in

by

Comments

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

bn_BDবাংলা
Powered by TranslatePress