সাংবাদিকদের মারামারি, এবার পুলিশ ছিল নিরাপদ দূরত্বে

যা দেখালেন আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা তা আমাদের দেশে স্বাভাবিক ঘটনা হলেও সহজভাবে নিতে পারলাম না। কেননা, বুঝাই যাচ্ছিল এরা উভয় গোষ্ঠীই (এটিএন-এর পক্ষে-বিপক্ষের সাংবাদিক) ঘটনার শুরুতে উত্তপ্ত ছিলেন। দিন শেষেও দেখলাম এরা একদল আরেকদলকে কুচক্রী বলছে, তারা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে। সহনশীলতা-স্থিরবুদ্ধি কোথায় উবে গেল?

এটিএন-এর লোকেরা তাদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে প্রতিহত করবেন এমনভাবে প্রস্তুত ছিলেন বলে মনে হলো, কারন সাংবাদিক নেতারা লন্ডনে মাহফুজুরের বক্তব্যের পর থেকে তাকে গ্রেপ্তার, জিজ্ঞাসাবাদ ও তার শাস্তি দাবি করছে। গত শনিবার সাগর-রুনি হত্যাকান্ড ও মাহফুজুরের বক্তব্যের সম্পর্কে কম-জানা কিছু সেলিব্রেটি শিল্পী-কলাকুশলী তাদের মাহফুজুরের পক্ষে কথা বলায় এবং সোমবার মানববন্ধনের ডাক দেয়ার ফলে এটিএন-এর সাংবাদিক-কর্মচারীদের বুকের পাটা বড় হয়ে যায় কয়েকহাত। তারা সেদিন থেকেই এই বিষয়ে সংবাদ-আলোচনা নিজেদের মতো করে প্রচার করতে থাকেন।

এমনকি রবিবারের ঘটনার পর এটিএন-এ স্ক্রল দেখলাম তাদের সাংবাদিকদের উপর নাকি লাঠিসোটা নিয়ে দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে প্রেসক্লাব এলাকায়। মুহুর্তেই চমকে উঠেছিলাম “এটা কি হলো? স্যাবোটাজ নয়তো?” পরে অন্যান্য টিভিতে দেখে নিশ্চিত হয়েছি নাটকের ব্যাপারে।

ডিইউজে’র সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ১২টার মানব-বন্ধনের ঠিক আগে যখন মাহফুজুরকে দায়ি করে এটিএন কার্যালয় ঘেরাওয়ের মত ক্ষুব্ধ ঘোষনা দিলেন তখনি গায়ে লেগে গেল মাহফুজুরের লোকদের যারা নতুন চালান পেয়ে মাঠে নেমেছে বিরোধীপক্ষকে ঠেঙ্গাতে। আর তাই তী জাহাঙ্গীরের উপর হামলে পড়লেন তারা। টেনে-হিচড়ে নিয়ে গেলেন প্রেসক্লাবের ভেতর। তাকে বাঁচাতে গিয়ে সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা আবার হামলাকারীদের ছাড়িয়ে গেলেন।

আমি বলি কি, ভাই এটিএন-এর লোকজন তো খোলা রাস্তায় আকাম করে পচে গেছে, তাদের উপর মুহুর্তের মধ্যে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে নিজেদের ক্ষমতা বা ঐক্য জাহির করাটাও শোভন হলোনা। যারা সত্যের পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে—তারা অধৈর্য হলে চলে না।

আর আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা যারা প্রেসক্লাব এলাকায় দায়িত্বে ছিলেন টিভিতে দেখতে পাইনি। সম্ভবত উনারা “নিরাপদ দূরত্বে” ছিলেন। এমন বোঝাপড়া অবশ্য ভালো জিনিস। পুলিশের (বিশেষ) দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকরা কাছে যাবেন না, আবার উল্টোটাও। বাহ।

কিন্তু এই জোড়া খুনের রহস্য উদ্ঘাটন নিয়ে র‍্যাব-ডিজিএফআই কি গবেষনা করছে? প্রায় ৫মাস হতে চললো, নিহত সাংবাদিকদের কোন সুহৃদ, অপরাধ বিশেষজ্ঞ, অপরাধ সাংবাদিক—তারাও কোন হুদিস পাচ্ছেনা (নিজের অক্ষমতার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনাপূর্বক)!

সকল প্রকার সামাজিক-রাজনৈতিক-রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস-দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করা উচিত আমাদের। এই অবস্থায় কারিগরেরা কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিলে বা অসহনশীল আচরন করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। বরং আমরা ধৈর্য ধরে কেন অমানুষগুলোকেই নিজেদের ফাঁদে পড়তে দিচ্ছিনা?

‘প্রয়োজনে এটিএন কার্যালয় ঘেরাও’

সাংবাদিক নেতার ওপর এটিএনের কর্মীদের হামলা

ATN Bangla journos assault DUJ leader

Comments

  1. সাহাদাত উদরাজী এভাটার

    হা হা হা…।।
    লোকে যা বুঝার তা বুঝে গেছে!

        1. probirbidhan এভাটার

          কি আর কমু কন, ও তো মানুষ না, গাধার বাচ্চা।

  2. probirbidhan এভাটার

    মাহফুজুর রহমান দুঃখিত ও ক্ষমা প্রার্থী http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-07-16/news/274171

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

bn_BDবাংলা
Powered by TranslatePress