এই মুহূর্তে যাবার কোন জায়গা নেই ওদের

gulshanSlam
মোহাম্মদপুরে বৃষ্টি হচ্ছে, ২/৩ দিনের খরা রোদের পর। মোবাইল থেকে সম্প্রতি তোলা ছবিগুলো নেটবুকে নিতে গিয়ে বনানী ১১-এর ছাদহীন বস্তিঘরগুলোর দিকে চোখ পড়লো, কয়েকটা পিচ্চি গুলশান ব্রিজের উপর রাখা চৌকিতে দাঁড়িয়ে হাতের ডাল দিয়ে গাছের পাতা যোগারের চেষ্টা, আমাকে পেয়ে এক বয়ষ্কা মহিলা নালিশ জানাতে শুরু করলেন, দেখা পেলাম মাতিয়ার ভাইয়ের যিনি আমাকে মংগলবারের ঘটনার বর্ণনা দিলেন।
আমার অভিজ্ঞতা বৃহষ্পতিবারের।
হাল ছাড়েনি কেউ। ছবিঃ লেখক
অনিশ্চয়তা ওদের ছুঁতে পারেনি। ছবিঃ লেখক

 

মতিয়ার ভাইকে ফোন করলাম, উনি এখন ডিউটিতে, ছুটি হবে ২টায়। লেকের পূর্বপাড়ের একটা এপার্টমেন্টে ৩৫০০টাকায় দারোয়ানের চাকরি করেন প্রায় ৪৫ বছরের এই মানুষটি। জানালেন প্রায় ৫০টি পরিবার বৃষ্টি থেকে বাঁচতে পলিথিন দিয়ে ছাদ বানিয়ে আবার আগে জায়গাতেই থাকতে শুরু করেছে। “এখন তো বাসা ভাড়া পাইতাছিনা। ১ তারিখ অনেক দেরি! কেউ কেউ ব্রিজের পাশের রাস্তায় থাকতেছে।”

মতিয়ার ভাই সেদিন বলছিলেন হঠাৎ ঘটে যাওয়া মুহুর্তগুলোর কথা। ছবিঃ লেখক

 

সেদিন রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট রোকনউদ্দিন মাহমুদ আর গুলশান পুলিশ আর কিছু ষন্ডাপান্ডা মিলে ১১৫টি বস্তিঘর ভেঙ্গে দিল। কাউকে কাউকে মারধরও করেছে উচ্ছেদকারীরা বলে অভিযোগ করলেন মতিয়ার ও আরো কয়েকজন। এমনকি আসাদুজ্জামান নূর এমপির ছেলে সেখানে উপস্থিত হয়ে নোটিশের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তার কলার চেপে ধরেন ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব, তুই-তোকারি করেন, এবং শেষ পর্যন্ত হাতকড়া অবধি গেল বিষয়টা।

অতঃপর নূর সাহেবের ফোন আসলে এর একটা রফা হয়। কিন্তু উচ্ছেদ কার্যক্রম থামেনি, বলেন মতিয়ার।

বিকেলবেলা বস্তির বাচ্চাগুলোর খেলার জায়গা ছিল ব্রিজটা। ছবিঃ লেখক

 

বস্তিবাসীরা বলেন, কদিন ধরে সিকিউরিটির লোকজন বলাবলি করছিল যে আমাদের যেতে হবে, কিন্তু কেউ ঠিক করে বলেনি কবে থেকে, রাজউক কোন নোটিশ দেয়নি। আরেকজন বললেন গুলশান সোসাইটির বিরোধীতার কারনেই তাদের এই হাল।

গুলশান থানার ওসিকে উদ্ধৃত করে মতিয়ার জানালেন, “এই বস্তিতে কখনো মাদক বা অন্যান্য অপরাধের জন্য আমাদের আসতে হয়নি।”

মংগলবার সকালেই কয়েকজন গিয়েছিলেন ব্যারিস্টার আনিসুল হকের বাসায়। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন সাহায্য করার, পূনর্বাসনের বিষয়ে। কিন্তু তিনিও কিছু করার আগেই দুপুরে সব ঘর ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে।

কিন্তু কেউ এলাকা ছেড়ে যায়নি এখনো। মংগলবারের পর কর্তৃপক্ষের কেউ আর আসেনি এদিকে।

গতবছর জুলাই মাসে তোলা। ছবিঃ লেখক

Posted

in

by

Comments

  1. […] এই মুহূর্তে যাবার কোন জায়গা নেই ওদের […]

  2. ragdoll cats Avatar

    Thanks for another wonderful post. Where else could anyone get that type of
    info in such an ideal way of writing? I’ve a presentation subsequent week, and I’m at the search for such info.

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

en_USEnglish
Powered by TranslatePress