আমাদের ‘নারী-বিমুখ’ নারী-প্রধানমন্ত্রী(রা)

ছবিঃ বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডট কম

বিষয়টা আগেও খেয়াল করেছি, কিন্তু এতোটা প্রবলভাবে আঘাত করেনি আমাকে। কিন্তু আজ যখন এক বন্ধুর ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেখলাম প্রধানমন্ত্রী তার আমেরিকা সফরে অসুস্থ হুমায়ুন আহামেদকে দেখতে গিয়েছিলেন এবং চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার ডলার দিলেন, মনে পড়ে গেলো ঢাবি’র শিক্ষক রুমানা মঞ্জুরের কথা, যিনি এখন কানাডায় আছেন। দেশের সাধারন মানুষের পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ছাত্র-শিক্ষকরা স্ব-উদ্যোগে ৭০হাজার ডলার সংগ্রহ করেছে তার চিকিৎসাব্যয় নির্বাহ করতে।

৫ জুনের ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পরে মামলা ও বিচার দাবি, হাসানের গ্রেপ্তার, রুমানার একচোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া—কোন কিছুই নাড়া দিতে পারেনি হাসিনাকে। জানা যায়, হাসান এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর সহায়তায় পালিয়ে ছিল কয়েকদিন। দেশে, চেন্নাইয়ে এবং শেষমেষ কানাডায় একের পর এক অপারেশন করেও রুমানার চোখদুটো বাঁচানো যায়নি। নারী-স্বাধীনতার বিরুদ্ধে পাষন্ড স্বামীর নির্মম আচরনের কারনেই তার এই দশা।

হাসানকে কয়েকবার রিমান্ডে নেয়া হয়েছে, তারপর কি হয়েছে মিডিয়াতে আসছেনা। রুমানা তার ৫ বছরে মেয়ে, বা-মা’র সাথে এখন কানাডাতেই আছেন।

নারীর বিরুদ্ধে দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অনেকগুলো ঘটনা আলোচিত হয়েছে সব জায়গায়; মিডিয়া, নানা সংগঠন ও হাইকোর্ট অব্দি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, কিন্তু সরকারযন্ত্রের বিশেষ কোন নড়াচড়া দেখলাম না।

দেখলাম না নারী স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা-বিধানে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ কোন পদক্ষেপ, যা মডেল হতে পারতো । একজন ক্ষমতাবান নারী হয়েও তিনি দেশের ঘুণে ধরা পুরুষপন্থী সমাজটাকে পরিবর্তন করতে পারছেন না? নাহ, এটা দুঃখজনক যে তিনি পারছেন না নারীর বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া নানা সহিংসতা, সামাজিক-পেশাগত বৈষম্য, আবমাননা থামাতে।

শক্তিশালী, সাহসী ও আশাবাদী বক্তব্যদানে পটিয়সী প্রধানমন্ত্রী, যিনি পাশাপাশি তীর্যক বাক্যবানেও দক্ষ, তিনি যদি “বিশেষ বিশেষ দিবস” ছাড়াও প্রেক্ষাপটের বিচারে কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপ নিতেন তাহলে অবস্থা এতোটা নাজুক হতোনা বলে আমার মনে হয়।

গত ২০ বছরে, আওয়ামী লীগ একবার আর বিএনপি (নারীপ্রধান) ২বার ক্ষমতায় এসেছিল। পড়াশুনা, অল্পকিছু মেয়ের চাকরি, ব্যবসা, মিডিয়া আর শোবিজ-এ আসার পাশাপাশি চলছে সহিংসতা-বৈষম্য। এ বড় লজ্জার।


Posted

in

,

by

en_USEnglish
Powered by TranslatePress