হায়রে ট্যাক্স! ন্যানোর দাম বাড়ালি ৩ গুন?

জ্বালানি স্বল্পতা ও রাস্তাঘাটের দুরবস্থার কারনে তৃতীয় বিশ্বের বাংলাদেশে সরকার সবসময়েই গাড়ি কেনা অনুৎসাহিত করে আসছে উচ্চ করারোপের মাধ্যমে (যদিও তা কোনমতেই কাজে আসছেনা), তবুও এটা নাকি অর্থনীতির একটা সুত্র-টাইপের জিনিস।

প্রাইভেট গাড়ি জিনিসটা আমার মতে মধ্যবিত্তের জন্য নিশ্চিতভাবে বিলাসিতা, কেননা এর বিকল্প আছে। তবুও আমাদের দেশে যত কমদামের বা রিকন্ডিশন গাড়ি আছে, তার বেশিরভাগ মনে হয় মধ্যবিত্তের দখলে। সাধ-আহ্লাদের ব্যাপারে আমরা আবার একটু ছাড় দেই কিনা! তাই ঋণ করে ঘি খাবার প্রবনতাটা যাচ্ছেনা।

আমার মাথাব্যাথা হলো কম দামের গাড়ি তাহলে কেন বানানো হয় (আমাদের দেশে না) আর কেনই বা আমদানি করা হয়, যদি জনগনকে শতকরা ১৩২ ভাগ ট্যাক্স দিতে হয়? ২২৩,২১৪ টাকার টাটা ন্যানো গাড়ি যদি আমাদের ৫৯৯,০০০ টাকা দিয়ে কেনা লাগে, তাহলে মাথাব্যাথা না হবার কোন কারন আছে?

শুরুতে শুনেছিলাম এটার দাম হবে ১ লাখ রুপি।

যাদের মাসিক বেতন দিয়ে সংসার চালাতে হয়, তাদের ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া ছাড়া আর কি-ই বা করার থাকতে পারে? ফলে আরেকধাপ ট্যাক্স (সুদ)-এর পর খরচটা কত দাঁড়ায় তা ভেবে না পেয়ে আমাকে ৩ বছরের শখ জলাঞ্জলি দিতে হলো আজ। কেননা সাথে আছে পেট্রলের দাম আর অবধারিত নিয়মিত খুচরা খরচ।

২০০৮ সালে কটকটে হলুদ রঙের ছোট গাড়িটা প্রথম যখন দেখি, তখনই ভালো লেগে গিয়েছিল, যদিও পরে বিস্তারিত জেনে একটু খুঁতখুঁতানি শুরু হয়েছিল। জ্বালানি খরচ কম হলেও এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো নয়, তাছাড়া খুব তাড়াতাড়ি গরম হয়ে যায়। যে কারনে যতটা সাড়া ফেলবে বলে আশা করেছিল টাটা, তা সম্ভব হয়নি।

অতঃপর মনোযোগ গেল রপ্তানির দিকে–প্রথমে শ্রীলংকা, আর এখন বাংলাদেশ।

শনিবার ঢাকায় আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করছে ন্যানো। বদ দোয়া দিতে চাই আমি, কেননা আগ-পাছ হিসেব করলে এটা কেনার কোন মানে হয়না। এত টাকা দিয়ে এই সুন্দর (ঝামেলার) গাড়িটা কেন কিনব?

এতই যদি গাড়ি বিক্রি হয় এদেশে, তাহলে আমরা কেন এখনো আমদানি করে চলেছি? এত ট্যাক্স দিয়ে পাবলিকের যে উপকারটুকু হচ্ছে, তা কি ভারসাম্যপূর্ণ?


Posted

in

, ,

by

Comments

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

en_USEnglish
Powered by TranslatePress