বলতে ও শুনতে খারাপ শুনালেও শেখ হাসিনা-খালেদা জিয়ার মধ্যে নিকট (বা সুদূর) ভবিষ্যতে সদ্ভাব উদয় হবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
ন্যাম সম্মেলনে যোগ দিতে হাসিনা যখন ইরানে, ডেইলি স্টারে একটা খবর এলোঃ খালেদা নাকি রবিবারের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বলেছেন তার ছোট ছেলে কোকো নিরপরাধ, সে মিথ্যা মামলায় আসামী। আর বললেন হাসিনার একমাত্র ছেলে জয় নাকি দুর্নীতির সাথে যুক্ত, তার প্রমান আছে খালেদার কাছে। দলের সবাইকে ঝাড়ি দিলেন তিনি কেন তারা জয়ের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেননা সেজন্যে।
বেশ! এর ফল হয়তো আমরা দেখতে পাবো হাসিনা দেশে ফেরার পরপরই। তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও দলীয় চাটুকারেরা এর মধ্যেই বক্তব্য তৈরি করে রাখবেন। যাতে করে দেশে ফিরেই হাসিনা একটা বোমা ফাটাতে পারেন।
এমনিতেই হাসিনা তার উপদেষ্টা, মন্ত্রী, এমপি ও নেতা-কর্মীদের আকাম-কুকামের জন্য পেরেশান, তার উপর খালেদার এই আবিষ্কার নিশ্চয়ই বিচলিত করবে।
আর এভাবেই চলতে থাকবে।
উল্লেখ্য, খালেদার অপর সন্তান তারেক জিয়া দুর্নীতি-গ্রেনেড হামলা ইত্যাদির সাথে জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়। তাছাড়া ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত সময়ে তিনি তার বন্ধুদের নিয়ে হাওয়া ভবন থেকে অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রন করতেন বলে শোনা যায়।
আর হাসিনার মেয়ে পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা, আত্মীয় (পরিবারের বাইরের) শেখ সেলিম, শেখ হেলাল ও বেয়াইরের পরিবারের সদস্যদের বিরুধ্বে ঘুষ-দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতির অভিযোগ শোনা যায়।
এই দুজনের ব্যক্তিক দ্বন্দ্বের মূল কারন বোধকরি এদের পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক সংশ্রব। তাছাড়া আছে প্রচলিত সরকারি-বিরোধীদল খেলা, চাঁদা-জমি-ব্যবসা ইত্যাদি নিয়ে কামড়া-কামড়ি ইত্যাদি। আরো আছে তাদের আগের দলীয় প্রধানদের নাম ও নানা সাফল্য নিয়ে দম্ভ ও কটুক্তি।
তার উপর দেখুন, যে কেউ একজন যদি অপরের সাথে যোগাযোগ করেন এবং দেশটিকে একটি যৌথ খামারের মত করে উন্নতি করার দিকে নিয়ে যান উনারা আশেপাশে খুব বেশী নেতা-কর্মী পাবেন না। বেশিরভাগই নাখোশ হবে দলীয় প্রধানদের উপর, আর পরের নির্বাচনে হারার রাস্তাটা সুগম হবে।
এই আশংকার মধ্যে কেন যাবেন উনারা?
দেশের জন্যে? কি করে সম্ভব?
তারা মনে করেন সে তো একটি দলই যথেষ্ঠ। অপর দলের সাহায্য চাওয়া বা নেয়া এখানে একরকম হারাম।
দেশ-জনগন জাহান্নামে যাক। উনাদের ইচ্ছা-আত্মসম্মান আগে।
উনাদের অন্ধ দলীয় লোকজন যাই বলুন না কেন, ইতিহাসে এদের নাম লেখা থাকলেও তা সামগ্রিকভাবে প্রশংসাসূচক হবে না এটা নিশ্চিত বলতে পারি।
রাজনীতিতে ব্যক্তিগত সম্পর্কঃ হাসিনা-খালেদার শুভেচ্ছা বিনিময়
শান্তি চাইলে ন্যায়বিচারের বিকল্প নেই
আস্থা হারাচ্ছেন, ভোট হারাচ্ছেন হাসিনা
সুরঞ্জিতের গদিপ্রীতি; রাষ্ট্রীয়ভাবে দুর্নীতি’র পালন
Hasina’s ‘Irrational’ comment, Once Again
হাসিনা’র বয়ানঃ মার্চ ১৪, ২০১২
খালেদা’র বয়ানঃ মার্চ ১২, ২০১২
PM to come forward to remove the political standoff
আমাদের ‘নারী-বিমুখ’ নারী-প্রধানমন্ত্রী(রা)
আমাদের পূর্বপ্রস্তুতি নেই, অনেক ব্যাপারেই!
ব্লেম গেমঃ ‘পরিবর্তন’ কই?
প্রসঙ্গ উইকিলিকসঃ ফখরুলের (বিএনপির) মাথা ঘুরে গেছে!!!
কিছু শব্দ “থাকবে না”
মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যঃ
* বাঙালি জাতি হিসাবে আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত, আমরা যতই গালাগালি করি না কেন ভোটের সময় এদেরকেই বারবার ভোট দেই পরে হায় হায় করার জন্য। কোকো-জয় এরা বারবার আমাদের উপর চড়াও হবে। এই চক্র থেকে বাঁচতে হলে কোনও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভোট দেবেন অথবা একাধিক সিল মেরে বালট পেপারটাই নষ্ট করে দিবেন। কারণ “না ভোটের” অপশন থাকছে না।
সিন্দাবাদের দানব আমাদের ঘাড়ে চেপে আছে, এটা নিজে থেকে নামবে না। আপনাকে বাধ্য করতে হবে।
**ঠিক তাই। আমরা যদি ভোটের মত স্পর্শকাতর বিষয়টা নিয়ে খামখেয়ালিপনা বন্ধ না করি তাহলে এরকমই চলতে থাকবে, আর হাসিনা-খালেদারা ক্ষমতায় এসে বলতে পারবেন জনগন আমাদের বিপুল ভোটে জিতিয়েছে, সুতরাং আমরাই ক্ষমতায় থাকবো এবং জনগনের জন্য (!!!) কাজ করে যাবো।
আমার মনে হয় আমাদের দেশের শুধু অশিক্ষিত বা অল্প-শিক্ষিতরা নয়, বেশিরভাগ শিক্ষিতরাই (শুধু ডিগ্রী থাকলেই তাকে আমি তাকে শিক্ষিত বলিনা) খুঁটিনাটি বিচার-বিশ্লেষন ছাড়াই ভোট দিতে যায়।
*লেখাটার neutrality and quality দুটোই চমৎকার। লেমিনেটিং করে দুই দলের কর্মীদের ঘরে টানিয়ে রাখা উচিত।
**হাহাহা…কিন্তু ওরা জানতে পারলে আমার ঘাড় মটকে খাবে। বলবে এত্তো বড় সাহস, শালা বাম বা তৃতীয় শক্তি ইত্যাদি!
*বাংলাদেশের জনগণ এই দুই নেত্রীকে ভালবাসে, কারণ ওনারা ঠিক তাদের মত। দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা কোন না কোনভাবে দুর্নীতির সাথে জড়িত। জনগণ জানে যে লোম বাছতে গেলে কম্বলই উজার হবে। প্রত্যেকেই নিজেকে অন্যের আয়নায় দেখতে ভালবাসে।
**রাজনীতি তো আজকাল একটা টাকা কামানোর রাস্তা, মানে পেশাঃ কারো জন্য পার্ট-টাইম আর বেশিরভাগের জন্য ফুলটাইম। নেতাদের কাছে এটা এখন ব্যবসা। আর দুর্নীতি হচ্ছে সেই কামাইয়ের সবচেয়ে সহজ (শর্টকাট) মাধ্যম। এই পেশা গত ২০ বছরে (তথাকথিত গনতন্ত্রের সময়ে) বিপুলভাবে জনপ্রিয় হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ রাজনীতিতে যোগ দিয়েছে। এদের কেউ কেউ সক্রিয়ভাবে দলের লেজুড়বৃত্তি করছে (নেতাদের কু-আদেশ পালন করছে) আর কেউ বা শুধু দেখানোর জন্য সাথে আছে। নিজেদের মাথা খাটিয়ে কতজন ব্যবসা করে সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।
আর এই যজ্ঞ দেখে সাধারন মানুষও স্রোতের মত রাজনীতি ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। কেননা এই দুই কাজে ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে কম। কেননা, দলের প্রধানেরাই যেখানে চুরি-চামারি করে সেখানে নেতা-কর্মীদের ভয় কি!
ছোটবেলায় যতটুকু শুনেছি ও দেখেছি এক একটা এলাকায় কতজন খারাপ লোক আছে সবাই জানতো, মানে গোনা যেত। আর এখন কয়টা সৎ লোক আছে তা গোনা যায়।
এইসব নাগরিকদের আওয়ামী লীগ বা বিএনপি “জনগন” বলে স্বীকৃতি দেয়না। এরা চুরি তো করেই না, বরং খালি সমালোচনা করে, সরকারের ভুল ধরিয়ে দেয়, প্রতিবাদ ইত্যাদি করে।
*আসলে আমরা সবাই রাজনৈতিক নেতাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন চাই, দেশে গণতন্ত্র চাই, ভাল নেতা চাই যে নেতা জনগনের কথা চিন্তা করবে, নিজেরটা না। আপনি ঠিক বলেছেন এই দুই মহিলার কোনদিন আপোষ হবে না। আমরা এদের হাত থেকে মুক্তি চাই।
**আপনার কথার সাথে আমি প্রায় পুরোটাই একমত। শুধু “এদের হাত থেকে মুক্তি চাই” এটা বাস্তবসম্মত নয় তাই বলতে পারছিনা জোরগলায়।
তবে উনাদের চিন্তার-আচরনের আশু পরিবর্তন কাম্য। কেননা, উনাদের এবং উনাদের দলের নেতা-কর্মীদের কাছে মানুষের অনেক আশা।
*শেখ হাসিনাকে নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না, কারন তিনি যদি ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র চালু না করতেন তা হলে আজ আমরা স্বাবলম্বী হতাম না। ডিজিটাল বাংলাদেশ কেউ যদি চায় তাহলে শেখ হাসিনা কে চাইবে।
**এত ছোট একটা কারনে আমরা সাবলম্বী হয়ে গেছি এটা বলাটা বোকামী মনে হলো।
আর এই ডিজিটাল যুগে আমরা ডিজিটাল হতে চাই সেটাই তো স্বাভাবিক। তবে কম্পিউটার-ইন্টারনেটের যে দাম ও নিম্নমানের সেবা তাতে মোটামুটি একটা ডিজিটাল বাংলাদেশ বানাতে আরো ২০০ বছর লাগবে।
*বাংলাদেশের মানুষ আজ পাগল হয়ে গেছে খালেদাকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর জন্য কারণ তারা সুখে থাকতে চায়না। একজন কে দুইবার ক্ষমতায় দিলে দেশে সুখ-শান্তি আসবে ও স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।
**হ্যা, এই দেশে দ্রুত উন্নয়নের জন্য কোন একটি সরকারকে অন্তত ৩ টার্ম ক্ষমতায় থাকতে হবে। তবে তার জন্য তো জনগনের আস্থা নিয়ে, ভোটে জিতে আসতে হবে। স্বৈরাচার এরশাদের মত ক্ষমতা কামড়ে থেকে, নিজের পছন্দমত নির্বাচন করলে তো হবেনা। তার উপর সারা বছর যদি সরকারি দল নিজেদের খেয়ালখুশিমত নানা সিদ্ধান্ত নেয় (বিশেষ করে দ্রব্যমূল্য-তেল-গ্যাস-বিদ্যুতের দাম), বিশেষ কোন দেশের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখে এবং কারো কারো সাথে ঝগড়া করে এবং তার পেছনে যৌক্তিক কারন দেখাতে ব্যর্থ হয় তবে টানা ২/৩ বার ক্ষমতায় আসা/থাকা সম্ভব নয়।
গরিব-মধ্যবিত্তদের সুযোগ-সুবিধার কথা তো সবার আগে ভাবতে হবে, কেননা এদেশে ধনীর সংখ্যা ১০ ভাগের বেশি হবেনা।
কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেখুন তোঃ সরকারি দলের নেতা-কর্মী, কোটিপতি ব্যবসায়ি আর উচ্চপদস্থ আমলারা ছাড়া কারা ভালো আছে?
খাই-খাই অভ্যাস পাল্টাতে হবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.