জামায়াতের ইসলাম, রাজনীতি ও আমাদের দূর্বলতা

[slideshow]

পাকিস্তানপন্থী জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা মানেনা, সংসদের দ্বারা আইন হবে তা মানেনা, এবং মানুষের তৈরি আইনে দেশ চলবে তাও মানেনা। তারা চায় ইসলামী আইন। মানে হয়তো কোরানের আলোকে ও হাদিসের সহায়তায় রাষ্ট্র পরিচালনা করা।

এটা কোন রাজনৈতিক বক্তব্য না, এসব কথা এই দলের গঠনতন্ত্রে লেখা।

সবচেয়ে আশ্চর্যের ও আফসোসের বিষয় হলো যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, এদেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, খুন-ধর্ষন-লুটপাট করেছে মুসলমান-হিন্দু নির্বিশেষে, তাদের গঠনতন্ত্রে ২০১২ সালেও এসব লেখা! তারা এখনও বাংলাদেশের আইনের আওতায় রাজনীতি করে যাচ্ছে গঠনতন্ত্রে এসব সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়বস্তু থাকা স্বত্বেও। ২০১০ সাল থেকে ৪ বার তাদের এই দুটি বিষয়সহ ৮টি ধারা সংশোধন করতে বলা হয়েছিল, তারা করেনি। কত দুঃসাহস! হায়রে আমাদের নির্বাচন কমিশন, হায়রে আমাদের সরকার-প্রশাসন!!! (আপডেটেড, নভেম্বর ৭, ৫টা ৫৫মিনিট)

জামায়াতের মহান উদ্দেশ্য বাংলাদেশে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, কারন যেহেতু–

১) আলাহ ব্যতীত নিখিল সৃষ্টির কোন ইলাহ নাই এবং নিখিল বিশ্বের সর্বত্র আলাহর প্রবর্তিত প্রাকৃতিক আইনসমূহ একমাত্র তাঁহারই বিচক্ষণতা, শ্রেষ্ঠত্ব ও সার্বভৌমত্বের সাক্ষ্য দান করিতেছে;

২) আলাহ মানুষকে খিলাফতের দায়িত্ব সহকারে পৃথিবীতে প্রেরণ করিয়াছেন এবং মানব রচিত মতবাদের অনুসরণ ও প্রবর্তন না করিয়া একমাত্র আলাহ প্রদত্ত জীবন বিধানের অনুসরণ ও প্রবর্তন করাকেই মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করিয়া দিয়াছেন;

৩) আলাহ তাঁহার প্রদত্ত জীবন বিধানকে বাস্তব রূপদানের নির্ভুল পদ্ধতি শিক্ষাদান ও উহাকে বিজয়ী আদর্শ রূপে প্রতিষ্ঠিত করিবার উদ্দেশ্যে যুগে যুগে নবী-রাসূলগণকে প্রেরণ করিয়াছেন;

৪) বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুলাহ (সালালাহু আলাইহি ওয়া সালাম) আলাহর সর্বশেষ নবী ও রাসূল এবং আলাহর প্রেরিত আল-কুরআন ও বিশ্বনবীর সুন্নাহই হইতেছে বিশ্ব মানবতার জীবনযাত্রার একমাত্র সঠিক পথ সিরাতুল মুস্তাকীম;
৫) ইহকালই মানব জীবনের শেষ নয় বরং মৃত্যুর পরও রহিয়াছে মানুষের জন্য এক অনন্ত জীবন যেখানে মানুষকে তাহার পার্থিব জীবনের ভাল ও মন্দ কাজের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হইবে এবং সঠিক বিচারের পর জান্নাত বা জাহান্নাম রূপে ইহার যথাযথ ফলাফল ভোগ করিতে হইবে;
৬) আলাহর সন্তুষ্টি অর্জন করিয়া জাহান্নামের আযাব হইতে নাজাত এবং জান্নাতের অনন্ত সুখ ও অনাবিল শান্তি লাভের মধ্যেই মানব জীবনের প্রকৃত সাফল্য নিহিত;
৭) আলাহর বিধান ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি দিক ও বিভাগে প্রতিষ্ঠিত করিয়াই মানুষ পার্থিব কল্যাণ ও আখিরাতের সাফল্য অর্জন করিতে পারে;
৮) স্বাধীন বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ এবং বাংলাদেশের জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের মধ্য দিয়া বাংলাদেশ বিশ্বেও মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম জাতি-রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করিয়াছে; –সেহেতু এই মৌলিক বিশ্বাস ও চেতনার ভিত্তিতে ইসলামী সমাজ গঠনের মহান উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-এর এই গঠনতন্ত্র প্রণীত ও প্রবর্তিত হইল।

এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল কেননা প্রধান বিরোধীদল বিএনপির এরা প্রধান শরিক। এদের হাতে ভোটও আছে অনেক। দেশের কয়েকটি জেলায়, মাদ্রাসায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে, মেডিকেল কলেজে ও বুয়েটে এদের ব্যাপক প্রাধান্য আছে। আর শিক্ষিত-অশিক্ষিত ধর্মভীরু মুসলমানরা তো আছেই।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের হাত ধরে এই দলটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরোধীতা করা সত্বেও ১৯৭৯ সালের পর নানাভাবে রাজনীতি, প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বেসরকারি নানা পেশায় প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করে এই ২০১২ তে এসে এরা মহীরুহ হয়ে গেছে, শিকড় ছড়িয়ে দিয়েছে সমাজের গভীরে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভবে নিয়ন্ত্রন ও প্রভাবিত করছে দেশের একটি বিশাল মুসলিম জনগোষ্ঠীকে। এরশাদের আমলে রাষ্টধর্ম হিসেবে ইসলামকে ঘোষনার মাধ্যমে এদের রাজনীতি করা ও সমাজে প্রভাব বিস্তার করার পথ সুগম হয়।

স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন হলেও এদেশে কখনো জামায়াত নির্মূল আন্দোলন গড়ে উঠেনি। যা প্রমান করে এদের শক্তি আর সাহস।

রাজনৈতিক ফায়দা নিতে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ পর্যন্ত এদের সাথে সরকারবিরোধী জোট করেছিল। তবে তা বেশীদিন টিকেনি।

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম জনগনকে সাথে নিয়ে একসময় গোলাম আযমের বিচার করলেও ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করেনি আওয়ামী লীগ, জনগনের সমর্থন থাকা সত্বেও। ফলে ২০০১ সালে বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে ক্ষমতায় এসে নিজেদের অবস্থা আরো পাকাপোক্ত করেছে জামায়াত।

বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদেরা বলেন রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। ব্যবসার মতো রাজনীতিতেও আসলে ফলাফলের বা লাভের জন্য ছোটাছুটি চলে, গালাগালি হয়, মারামারি হয়। যদিও এই দুটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ও অবিচ্ছেদ্য বিষয়ে অংশগ্রহনকারীদের নৈতিকতা ও সততা থাকাটা সবচেয়ে বেশী জরুরি, কেননা এগুলোর দ্বারা একটি দেশে, সমাজে, পরিবারে ও ব্যক্তির জীবনধারা নির্ধারিত হয়।

দূর্ভাগ্যবশত অত্যাচারী শাসন থেকে স্বাধীনতার ৪১ বছর পরেও আমরা এখন নিজেদের দেশের মানুষের দ্বারা, স্বদেশী পুলিশ দ্বারা, সরকারব্যবস্থা দ্বারা শোষিত ও নির্যাতিত হচ্ছি। আবার দুর্নীতি ও অন্যায়ের প্রবল প্রসারের কারনে সাধারন মানুষও যোগ দিচ্ছে সুবিধাবাদীদের দলে। যার ফলাফল জাতি হিসেবে বাংলাদেশের মানুষদের সার্বিক নৈতিক অবক্ষয়।

আর এই দূর্বলতার সুযোগটাই নিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। আর সম্প্রতি শুরু হওয়া যুদ্ধাপরাধের বিচার হবার আগে পর্যন্ত গোলাম আযম, নিযামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান আর সাঈদীর মত ঘৃন্য জানোয়ারগুলো এই দলের নেতৃত্বে থেকে এই দেশে একটা অস্থিরতা বজায় রেখেছে, বাধা দিয়ে চলেছে বাংলাদেশপন্থী কর্মকান্ড।

তাদের সহযোগী হিসেবে আছে ছাত্র শিবিরের উচ্চশিক্ষিত নেতাকর্মীরা। দলের কর্মী ছাড়াও লাখে লাখে সাধারন মুসলমান এদের পক্ষে আছে, যারা চায় বর্তমান শাসনব্যবস্থা, সমাজব্যবস্থা ভেঙ্গে সাচ্চা মুসলমানদের ইসলামী একটা দেশ হিসেবে পৃথিবীতে মাথা তুলুক বাংলাদেশ। আবার কিছু ছোট ছোট ইসলামী দল ও জঙ্গী সংগঠন আছে তাদের মতাদর্শী। কিছু ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু এখনো কমপক্ষে ২০টি সমমনা দল আছে জামায়াতের। এরা আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের মত দুর্ধর্ষ কর্মকান্ড করেনা, বরং ধীরে চলো নীতি মেনে শিকড় ছড়িয়ে যাচ্ছে ক্রমশ।

আর বোধহয় তাই ধর্মপ্রচার বাদ দিয়ে এরা রাজনীতি করে ক্ষমতায় যাবার জন্য, ক্ষমতা নিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজে নিজেদের পছন্দের পরিবর্তন আনতে।

এদের শিকড় এভাবে বাড়তে থাকলে, কয়েকটা নেতার মৃত্যুদন্ড বা জেল হলেও, এরা টিকে যাবে স্বাধীনতাপন্থী দলের দূর্বলতা ও আপামর জনসাধারনের সীমাবদ্ধতা ও অনীহা বা খামখেয়ালীপনার কারনে।

প্রথমত, কঠোর আইন প্রনয়নের মাধ্যমে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে যেন কোন ধর্মাশ্রয়ী দল মাথা তুলতে না পারে।

দ্বিতীয়ত, সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম বাদ দিতে হবে।

তৃতীয়ত, জামায়াতের নেতাদের বক্তব্যসম্বলিত বই ও পুস্তিকা পর্যালোচনা করে সেগুলোর মাধ্যমে দেশে ইসলামের নামে যেসব ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে সেগুলো জাতির সামনে তুলে ধরে সর্বজনগ্রাহ্য চিন্তাবিদদের মাধ্যমে সেসব ব্যাখ্যার অসাড়তা প্রমানে সরকারকে সচেষ্ট হতে হবে।

চতুর্থত, পত্রিকা, টিভি, মসজিদ, মাদ্রাসা, ওয়াজ মাহফিল ও পীরদের আস্তানায় কে কি বক্তব্য রাখছে তার পর্যালোচনা করতে হবে এবং দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

সর্বোপরি, শিক্ষিত ও ধর্মভীরু অরাজনৈতিক মানুষদের আরেকটু সচেতন হতে হবে যেন তারা কোরান পড়ে, নিজের বিচার বিবেচনায় ও সর্বোচ্চ মানবিক আচরন করে এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদের জীবন ও দর্শন অনুসরনের মাধ্যমে নিজেদের সত্যিকারের মুসলমান হিসেবে গড়তে পারেন।

Myanmar & Ramu: No punishment? Then let’s start it again!

We should not forget the 1971 War for ‘Bangladesh’

আওয়ামী লীগে যুদ্ধাপরাধী কারা? বিচার চাই।

The Satkhira frustration

এইবার গোলাম আযমের পক্ষে ভারতের জামায়াত প্রধান

গোলাম আযম দিয়ে শুরু করা দরকার ছিল

‘বুদ্ধিজীবী হত্যা’র স্পষ্ট ও সুষ্ঠু তদন্ত চাই

Comments

  1. […] জামায়াতের ইসলাম, রাজনীতি ও আমাদের দূর… […]

  2. probirbidhan Avatar

    জামায়াতের হামলা
    মাঠে নির্দেশনা আসে ‘গুচ্ছ এসএমএসে’ http://bdnews24.com/bangla/details.php?cid=3&id=210144&hb=top

  3. […] জামায়াতের ইসলাম, রাজনীতি ও আমাদের দূর… […]

  4. […] জামায়াতের ইসলাম, রাজনীতি ও আমাদের দূর… […]

  5. […] জামায়াতের ইসলাম, রাজনীতি ও আমাদের দূর… […]

  6. probirbidhan Avatar

    জামায়াত আবারও সময় চেয়েছে http://prothom-alo.com/detail/date/2012-11-21/news/307479

  7. probirbidhan Avatar

    on november 4 the party was given a month for revising their constitution… http://bdnews24.com/bangla/details.php?cid=3&id=209617

  8. probirbidhan Avatar

    Jan 24th, 2010 জামায়াতের গঠনতন্ত্র এখনো অসঙ্গত: ইসি http://bdnews24.com/bangla/details.php?id=119063&cid=4

  9. probirbidhan Avatar

    ঢাকা, জানুয়ারি ২৪, ২০১০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক রয়ে গেছে জানিয়ে তা সংশোধনের জন্যে দলটিকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

    ইসির গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা কমিটির একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে বলা হলেও জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র এখনো সংবিধান পরিপন্থিই রয়ে গেছে।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, “গত বছর ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগেই যেসব ধারা সংশোধন করতে জামায়াতকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, সেসব বহাল রেখে ২০০৯ সালে সম্মেলন করে ২৩ জুলাই ইসিতে স্থায়ী গঠনতন্ত্র জমা দিয়েছে তারা।”

    নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইতোমধ্যে ৩৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের স্থায়ী গঠনতন্ত্র পেয়েছি আমরা। এগুলো পর্যালোচনা চলছে। যাদের গঠনতন্ত্র সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে-তাদের তা সংশোধনের জন্য অনুরোধ জানানো হবে।”

    তিনি জানান, যতক্ষণ পর্যন্ত গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তা গৃহীত হবে না। একই সঙ্গে স্থায়ী গঠনতন্ত্র গৃহীত হলেই সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে ‘ধন্যবাদ জ্ঞাপন’ করে চিঠিও দেওয়া হচ্ছে।

    রোববার স্থায়ী গঠনতন্ত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত ৩৮টি দল স্থায়ী গঠনতন্ত্র জমা দিলেও ফ্রিডম পার্টি তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বাতিল হচ্ছে দলটির নিবন্ধন।

    রোববার জামায়াতসহ আরো ৮টি দলকে গঠনতন্ত্রে ছোটখাটো ত্র”টি দূর করতে বলে ইসি সচিবালয়ের আইন শাখা চিঠি পাঠায়।

    ইসি সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি সচিব সাবেদ-উর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রোববার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (ইনু) কে গঠনতন্ত্র গৃহীত হওয়ায় ধন্যবাদপত্র দেওয়া হয়।

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ও বিকল্পধারাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে নিবন্ধন আইনের পরিপন্থী ত্র”টি সংশোধনের জন্য।

    এর আগে আওয়ামী লীগকেও ছাত্র-প্রবাসী সংগঠনের বিষয়ে গণতন্ত্র সংশোধনে চিঠি দেয় ইসি। পরে সংশোধিত গঠনতন্ত্র গৃহীত হওয়ায় ক্ষমতাসীন দলটিকে এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিকেও ধন্যবাদ পত্র দেয় ইসি।

    দলের সাধারণ সম্পাদক/মহাসচিব বরাবর এসব চিঠি পাঠানো হয়।

    জামায়াতের গঠনতন্ত্রে যত আপত্তি

    নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, জামায়াতের সংশোধিত গঠনতন্ত্রের ২ ধারার ৫ উপ-ধারায় বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যতীত অপর কাহাকেও বাদশাহ, রাজাধিরাজ ও সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক মানিয়া লইবে না, … কাহাকেও স্বয়ংসম্পূর্ণ বিধানদাতা ও আইন প্রণেতা মানিয়া লইবে না … আল্লাহ ব্যতীত অপর কাহারো আসলেই নেই।’

    ইসির গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা কমিটির মতে, এ ধারার মাধ্যমে জনগণের রায়ে নির্বাচিত সংসদের আইন প্রণয়নের ক্ষমতাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।

    গঠনতন্ত্রের ৫ ধারার ৩ উপধারায় জামায়াতের দাওয়াত সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘… বাংলাদেশে ইসলামের সুবিচারপূর্ণ শাসন কায়েম করিয়া সমাজ হইতে সকল প্রকার জুলুম, শোষণ, দুর্নীতি ও অবিচারের অবসান ঘটানোর আহ্বান।’

    কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী দেশ গণতান্ত্রিক রীতিতে পরিচালিত হবে; এখানে ইসলামের সুবিচারপূর্ণ শাসনব্যবস্থা কায়েমের কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করে ইসি কমিটি।

    নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, জামায়াতের গঠনতন্ত্রে অন্তত সাতটি ধারা রয়েছে-যা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তবে বাকি দলগুলোর অধিকাংশেরই ২০২০ সালের মধ্যে কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে ছোটোখাটো ত্র”টি রয়েছে।

    গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের শর্তে বলা হয়েছে, দলীয় গঠনতন্ত্রের উদ্দেশ্যসমূহ সংবিধানের পরিপন্থি হতে পারবে না। এছাড়া ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ভাষা ও লিঙ্গ ভেদে কোনো বৈষম্য থাকতে পারবে না।

    গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ইসির সঙ্গে জামায়াতের সংলাপে দলটি এ দুটি ধারাই গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ থেকে বাতিল করার দাবি জানায়।

    ২০০৮ সালের ১৯ অক্টোবর ইসিতে নিবন্ধন আবেদন সংগ্রহ করতে গিয়ে জামায়াত নেতা এ্যাডভোকেট জসীমউদ্দিন সরকার বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান-সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করে না জামায়াত।

    তিনি বলেন, তাদের গঠনতন্ত্রে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বিষয়টি ‘ডিনাই’ করা হয়নি। এটা বিশ্বাসের বিষয়। মুসলিম হিসাবে সার্বভৌমত্ব আল্লাহর। রিজিওনাল সার্বভৌমত্বও এখানে রয়েছে। এটা কোনো সাংঘর্ষিক নয়।

    এসময় নিবন্ধন পেতে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসরণে প্রয়োজনীয় সব সংশোধন সম্পন্ন করেছে বলে জানান তিনি।

  10. […] জামায়াতের ইসলাম, রাজনীতি ও আমাদের দূর… […]

  11. probirbidhan Avatar

    Several clauses in Jamaat’s charter call for establishing the rule of Islam in the country through organised efforts.

    The party also refuses to accept parliament’s plenary powers to formulate laws, saying people must not accept anyone except Allah as the maker of laws.

    ২০০৯-এর রিট আবেদনে বলা হয়, চার কারণে জামায়াত রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন পেতে পারে না।

    প্রথমত, জামায়াত নীতিগতভাবে জনগণকে সকল ক্ষমতা উৎস বলে মনে করে না। সেইসঙ্গে আইন প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাকেও স্বীকার করে না।

    দ্বিতীয়ত, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে কোনো সাম্প্রদায়িক দল নিবন্ধন পেতে পারে না। অথচ কাজে কর্মে ও বিশ্বাসে জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক দল।

    তৃতীয়ত, নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দল ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের কোনো বৈষম্য করতে পারবে না। কিন্তু জামায়াতের শীর্ষপদে কখনো কোনো নারী বা অমুসলিম যেতে পারবে না।

    চতুর্থত, কোনো দলের বিদেশে কোনো শাখা থাকতে পারবে না। অথচ জামায়াত বিদেশের একটি সংগঠনের শাখা। তারা স্বীকারই করে তাদের জন্ম ভারতে। বিশ্বজুড়ে তাদের শাখা রয়েছে।

    ==এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৬বার সংশোধনী আনলেও, জামায়াতের গঠনতন্ত্র বাংলাদেশের চেতনা-বিরোধীই রয়ে গেছে। জামায়াতীরা সারাক্ষন ধন্যবাদ দেয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে, কেননা আপনাদের জন্যই যুদ্ধাপরাধী ও উগ্র-সাম্প্রদায়িক এই গোষ্ঠী এখনো টিকে আছে স্বাধীন বাংলাদেশে।==

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

en_USEnglish
Powered by TranslatePress