যুদ্ধাপরাধীদের থামান, এখুনি!

woman jessore dogsযুদ্ধাপরাধের বিচার চলছে, সাঈদীর মামলা শেষ পর্যায়ে, দেশে-বিদেশে জামায়াতীরা সেই রায় পেছাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, সাথে নানা ফন্দি-ফিকির করে পুরো বিচার কার্যক্রম বন্ধ করতে চাইছে। যেসব মামলা চলছে এবং যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে তারা সবাই জামায়াতী শীর্ষনেতা বা এর পৃষ্ঠপোষক, শুধু দুইজন বিএনপির, তাদের মধ্যে একজন আবার খালেদা জিয়ার খুব কাছের লোক। তাই বিএনপির এই স্বাধীনতাবিরোধী আন্দোলনে সহযোগিতা-মদদ থাকবে সেটা খুব স্বাভাবিক।

জামায়াত সেই ২০০৯ সাল থেকেই নানাভাবে এগুচ্ছে এই বিচার বন্ধ করতে। এদেশে তাদের সমর্থন/ভোট ৩০ লাখের বেশি না হলেও প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক “ক্ষমতা” অসীমের কাছাকাছি। সাথে আছে পাকিস্তানের জামায়াত, আইএসআই, সৌদি-আরব, আমেরিকা ও নানাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পৃষ্ঠপোষকরা যারা প্রতিনিয়ত টাকা-পয়সা, আইনি সহায়তা, বক্তব্য দিয়ে এই বিচারের “ভুল-ভ্রান্তি” বা একপেশে আচরন প্রমান করে একে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছে।

এদের কাছ থেকে যৌক্তিক/নৈতিক/বৈধ কার্যক্রম আশা করা বোকামী। যে করেই হোক, এরা ঝামেলা পাকাবেই। উদ্দেশ্য একটাই—প্রমান করা যে এই বিচার স্বচ্ছ নয়, এই বিচারে টার্গেট করে মামলা হয়েছে এবং রায় দেয়ার আগে থেকেই সরকারের চাপ আছে।

এখন পর্যন্ত আমাদের ট্রাইবুন্যালের বিচারকেরা যে পরিমান নিরপেক্ষতা দেখাচ্ছে এবং জামিন দিচ্ছে বা আসামী ও আইনজীবীদের যেভাবে কথা বলতে দিচ্ছে তা নজীরবিহীন। রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার সুযোগ রেখেছে সরকার। সকল সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য আইনী ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ সবকিছুই করা হচ্ছে যেন রায় কার্যকর হবার পরে বিচার নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের স্বচ্ছতার বিরোধী, আমি চাই আসামীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে রাস্তায় ছেড়ে দেয়া হোক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনির সামনে আমরা এদের পিটিয়ে-লাথি মেরে-খুঁচিয়ে মারতে চাই। যারাই এদের পক্ষে কথা বলবে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করা উচিত। এই স্বাধীন বাংলাদেশে কোন পাকিস্তানপন্থী-ভন্ড ইসলামিক শক্তি থাকতে পারবেনা। এরা মানুষ না, এরা জানোয়ার।

তবে সাংবাদিক হিসেবে আইন মেনে কথা বলা ও কাজ করতে আমি নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ।

মুক্তিযুদ্ধ আমি দেখিনি, কিন্তু কৃষক-শ্রমিক-জনতার মুখে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নাস্তানাবুদ করার বীরত্বগাঁথা শুনেছি, শুনেছি কিভাবে টার্গেট করে মুক্তিযোদ্ধা-বুদ্ধিজীবী-ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়রদের খুন করা হয়েছিল, ধর্ষিতাদের মুখে পাকবাহিনী ও তাদের এদেশীয় চামচাদের নৃশংস কর্মকান্ডের কথা শুনেছি, লুট-অগ্নিসংযোগের পর পালিয়ে বেড়ানো-ভারতে চলে যাওয়া পরিবারগুলোর দুর্দশার কথা শুনেছি, দেখেছি কিভাবে জামায়াত অখন্ডিত পাকিস্তানের জন্য প্রানপন চেষ্টা করেছে, কিভাবে শান্তিকমিটি-রাজাকার-আলবদর-আলশামস সৃষ্টি করা হয়েছিল, কিভাবে গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদ গং-রা সংগঠিত হয়ে পাকিস্তানের সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা-স্বাধীনতাকামী নারী-পুরুষের উপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালিয়েছিল।

আমার মনে পড়ে যুদ্ধের পর বাংলাদেশে এরা ছিল ঘৃণ্য-অস্পৃশ্য।

কিন্তু এখনও, স্বাধীনতার ৪১বছর পরে, এরা এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। সংখ্যায় এরা কম হলেও, সংগঠিত নেতা-কর্মী, অর্থ ও প্রশাসনিক প্রভাবের প্রাচুর্যের কারনে এরা এখন একটা বড় (কু)শক্তি হয়ে উঠেছে।

বঙ্গবন্ধু মারা যাবার পর দালাল আইন বাতিল ও প্রায় ১০,০০০ বিচারাধীন রাজাকারকে ছেড়ে দেয়া হলেও এরা ছাড় পেয়ে বাংলাদেশেই থেকে যাবে, বহাল তবিয়তে রাজনীতি-ব্যবসা করবে এটা মেনে নেয়া যায়না। যেই দলই ক্ষমতায় আসুক – এরশাদ, খালেদা বা হাসিনা – এদের বিচারের দাবী এদেশের সকল সচেতন জনগনের, যারা “রাজনীতি করার কারনে কাউকে কোন ছাড় দেয়না”।

“মীরজাফরেরা” জামায়াত-শিবির-শান্তিকমিটি-রাজাকার-আলবদর-আলশামসের বিচার চাইবেনা এবং তাদের বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে সেটাই স্বাভাবিক। মীরজাফরেরা যুগে যুগে পৃথিবীর ইতিহাস কলংকিত করেছে।

তবে এটাও ঠিক এই ট্রাইবুন্যালে অপেক্ষাকৃত কম অভিজ্ঞ আইনজীবী, তদন্ত কর্মকর্তা ও বিচারক নিয়োগের কারনে বিচারকাজে কিছু দূর্বলতা দেখা যাচ্ছে এবং তদন্ত ও মামলা পরিচালনায় লোকবল খুবই অপ্রতুল। যার ফলে আসামীপক্ষ আদালতে কিছু বাড়তি সুবিধা ভোগ করছে; আবার জামায়াতপন্থীদের দেশ-বিদেশে টাকার বিনিময়ে প্রচারনার বিরুদ্ধে সরকারের নির্দিষ্ট কোন সংস্থা/ব্যক্তি/মন্ত্রী দক্ষতার সাথে জবাব দিতে পারছেনা।

সর্বশেষ, ট্রাইবুন্যালের এক বিচারকের স্কাইপি ও ইমেইল একাউন্ট হ্যাক করে শিবিরের সাইবার বাহিনী, লন্ডনের ইকনোমিস্ট আর আমার দেশ পত্রিকা যে বেআইনি কাজ করেছে, তার বিরুদ্ধে সরকারের তরফ থেকে এখন নাগাদ কঠোর-যথার্থ কোন ব্যবস্থা এখনও নেয়া হয়নি। সরকারের কাছে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি, দয়া করে এই বিচারটা নিয়ে এরকম খামখেয়ালী করবেন না। শক্তহাতে এসব কার্যক্রম বন্ধ করুন, এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী এই জানোয়ারদের বিচারের পক্ষে আছে, নিজেদের কোন বৈষয়িক স্বার্থ ছাড়াই।

‘গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া তারা একটা রায় চায়’

Discrepancy in Dhaka

‘ইকনোমিস্টের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নয়’

Comments

  1. probirbidhan Avatar

    পুনর্গঠন করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২
    নিজামুলের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন ফজলে কবীর
    http://prothom-alo.com/detail/date/2012-12-12/news/312700

  2. probirbidhan Avatar

    আন্তর্জাতিকভাবে ও দেশের ভেতরে সকল প্রশ্নের উর্দ্ধে থাকার জন্য ট্রাইবুন্যাল-১এর বিচারক নিজামুল হক পদত্যাগ করেছেন বা সরকার তাকে সরিয়ে দিয়েছে। অনেক কমপ্রোমাইজ করা হলো ভদ্রতার খাতিরে, এবার আগেরমতোই যথানিয়মে বিচারকাজ শেষ করে প্রমানিত যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলানো ও বাকীদের সারাজীবনে কারাগরে পচে মরার ব্যবস্থা করতে হবে। আর কোন সুযোগ দেয়া নয়। সরকারের খামখেয়ালীপনার কারনে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এখন থেকে আরো সাবধান হতে হবে ও দক্ষতার সাথে ****দের মোকাবেলা করতে হবে।

    জামায়াত-বিএনপি অপশক্তির চাপে কোনমতেই এই বিচার বন্ধ করা যাবেনা।

    বন্ধু নিঝুম মজুমদারের একটা স্ট্যাটাস শেয়ার করছিঃ

    “বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম পদত্যাগ করেছেন। আমার দৃষ্টিতে যেটি’র কোনো দরকারই ছিলো না। এমন কিছুই হয়নি যেখানে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। তারপরেও ট্রাইবুনালকে বিতর্কের উর্ধে রাখতে, ট্রাইবুনালকে নিয়ে যাতে কেউ একটি কথা উচ্চারণের সাহস না পায় সে কারনেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হয়ত।

    জামাত গত ৩ বছর সময়ে এই ট্রাইবুনাল থেকে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে সরাবার জন্য কোনো পদক্ষেপ বাকি রাখেনি, কোনো উপায় বাকি রাখেনি। নোংরা থেকে নোংরাতম উপায়ে চেষ্টা করেছে তাকে সরাবার। এই পুরো ঘটনাটিতে জামাত শিবির তথা স্বাধীনতা বিরোধীদের উপর আমার যে ক্রোধ, আমার যে আক্রোশ সেটি আমি এখানে এখন না বলি।

    আমি শুধু বলি তাদের কথা যারা জামাত শিবির কিংবা বিএনপি’র এই ষড়যন্ত্রে সরাসরি না থেকেও কচ্ছপের মত তাদের খুলিখানা প্রায়ই গর্তের মধ্য থেকে বের করে টুক করে ট্রাইবুনালের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতেন। আমি শুধু বলি তাদের কথা যারা সিনেমা দেখার মত এই ট্রাইবুনাল বসে বসে দেখতেন আর পান থেকে চুন খসলেই পাছার *** চুলকিয়ে আর ঠোঁট বাঁকিয়ে বলতেন, “বিচার আমিও চাই, তবে সুষ্ঠু, ফেয়ার” ১৯৭২ সালে যখন দালাল আইনে বিচার শুরু হয় তখন মাওলানা ভাসানী ১৯৭৩ সালের মার্চ মাসে নির্বাচনের প্রাক্কালে স্বাধীনতা বিরোধীদের সমর্থন পেতে জাতীয় লীগের আতাউর রহমান সহ সকল পিকিংপন্থী জোট নির্বাচনের আগেই এই দালাল আইন বাতিল করবার জন্য আলটিমেটাম দেয়।

    মাওলানা ভাসানী এ সময় হুমকি দেন যে ১৯৭২-এর ৩১-শে ডিসেম্বরের মধ্যে দালাল আইন বাতিল না করলে তিনি দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবেন। (সূত্রঃ দৈনিক বাংলা, ৫ই ডিসেম্বর ১৯৭২)

    এই কথা সুশীলরা আজকে ৪০ বছর পর ভুলে গেছে।

    ১৯৫ জন পাকিস্তানী আর্মিকে বাংলাদেশের মাটিতে বিচার না করে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়া নিয়েও অনেকে সমালোচনা করে এই সুশীলরা। এই ১৯৫ জনের বিচার করলে পাকিস্তানে আটকে পড়া ৪ লক্ষ মানুষকে হত্যার হুমকি দেয় জুলফিকার আলী ভুট্টো। সে সময় ৩২ নাম্বারে এসে সেই স্বজনদের আত্নীয় স্বজন বঙ্গবন্ধুর পা ধরে বসে থাকতেন, নাকের পানি, চোখের পানি এক করতেন যাতে বঙ্গবন্ধু এই বিচার না করেন এবং তাদের স্বজনদের মুক্ত করে আনেন। বঙ্গবন্ধু পাহাড়ের মত অটল থাকেন। তিনি বিচার করবেন বলেই সিদ্ধান্ত নেন। একটা পর্যায়ে এই স্বজনেরা ৩২ নাম্বারের সামনে অবস্থান নেন, পত্রিকায় লিখতে থাকেন। সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার। পাকিস্তানও এইদিকে অটল থাকে। ১৯৫ জনকে ফিরিয়ে না দিলে তারা ছাড়বে না কাউকে। মিশরের প্রেসিডেন্ট, সৌদীর রাজা, কুয়েত, ইরান, ইরাকের সব রাষ্ট্রপ্রধানরা চাপ দিতে থাকে বঙ্গবন্ধুকে। বাংলাদেশকে কেউ স্বীকৃতি দিবে না বলে জানায়। মসলিম বিশ্ব থেকে বহিষ্কার করবে, যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে একটা পয়সাও কেউ পাঠাবে না বলে হুমকি দেয়। বঙ্গবন্ধু আর অটল থাকতে পারেন না। ১৯৫ জনকে ছেড়ে দেন।

    এই কথা সুশীলরা আজকে ৪০ বছর পর ভুলে গেছে।

    ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে খুন করা হোলো। থেমে গেলো বিচার। জিয়া ৩১শে ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে দালাল আইনটি বাতিল করে দেয়। বন্ধ করে দেয় বিচারের রাস্তা।

    এই কথা সুশীলরা আজকে ৪০ বছর পর ভুলে গেছে।

    ২০১০ সালের ২৫শে মার্চ থেকে চলা ট্রাইবুনালের প্রথম দিন
    থেকে বি এনপি, জামাত আদাজল খেয়ে নেমেছে বিচার বন্ধ করবার জন্য। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের লবিস্ট, আইনজীবী নিয়োগ করেছে। কিনে নিয়েছে পত্রিকা, জার্নাল, আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম। ভাড়া করেছে হ্যাকার, কিনেছে গোপন ডিভাইস। ওপেন টিভিতে বলছে, এই বিচার হতে দেবে না। যে কোনো উপায়ে এই বিচার বন্ধ করবে।

    এই কথাও সুশীলরা একদিন ভুলে যাবে, ইনফ্যাক্ট ওরা তো এটা এখনই মনে রাখছেনা। এরা মুখ বাঁকিয়ে বলবে, “কই বিচার তো হইলো না”। আর সাধারণ নাগরিকও মজা দেখে বসে বসে। খায়-দায়, ঘুমায়, ঘুরে ফিরে। একদিন তারাও আঙ্গুল তুলবে আওয়ামীলীগ সরকারের দিকে হয়ত।

    কিন্তু যুগে যুগে চলা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বলে না কেউ। খুনী খুন করে চলে যায়, ধর্ষক ধর্ষন করে চলে যায়, ডাকাত ডাকাতি করে চলে যায়। আমরা বলি, সাবধানে চললে তো আর খুন হোতো না, নিজেকে ঢেকে রাখলে তো আর ধর্ষিত হতে হোতো না, অর্থ লুকিয়ে রাখলে তো আর ডাকাতি হোতো না … হায় বাঙালী … আহা বাঙালী…”

  3. probirbidhan Avatar

    ট্রাইবুনাল-১ এর চেয়ারম্যান হিসেবে বিচারপতিটবু নিজামুল হক নাসিম পদত্যাগ করার পর থেকেই মউদুদ আহমেদ, খোন্দকার মাহবুবুদ্দিন, জয়নাল আবেদিন (এরা প্রত্যেকেই বিএনপি’র রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত) নতুন একটাআওয়াজ তুলছেন। সেটা হল পদত্যাগকারী বিচারপতি যেসব সাক্ষ্য রেকর্ড করেছেন সব বাতিল করতে হবে । মউদুদ এক ধাপ এগিয়ে, বলেছেন এই ট্রায়াল void ab initio অর্থাৎ শুরু থেকেই বাতিল।

    এ প্রসঙ্গে ড. শাহদিন মালিক, ব্যারিস্টার সাইফুদ্দিন খালিদ, রাস্ত্রপক্ষের কৌঁসুলি রানা দাশগুপ্ত, ঢাবির আইনের সহযোগী অধ্যাপক শেখ কার্জন সবার বক্তব্য শুনলাম। উনারা সবাই বলেছেন, নতুন করে ত্রাইয়াল শুরু করার কোন কথাই আইনে বলা নেই, দরকারও নেই।

    ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বা সদস্য পরিবর্তন হলে আইন অনুযায়ী পূর্ববর্তী বিচারকের অধীনে যতদূর বিচার কাজ সমাপ্ত হয়েছে সেখান থেকেই বিচার কাজ শুরু হবে । এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইন অর্থাৎ The International Crimes Tribunals Act,1973 এর ধারা-৬ পুরো ব্যাপারটা খোলাসা করার জন্য যথেষ্ট মনে হয়েছে যেখানে ৬(৬) বলা হয়েছে

    ‘A Tribunal shall not, merely by reason of any change in its membership or the absence of any member thereof from any sitting, be bound to recall and re-hear any witness who has already given any evidence and may act on the evidence already given or produced before it. এটার সাথে একয় ধারার ৪ উপধারা অর্থাৎ ৬(৪) অনুযায়ী, ‘If any member of a Tribunal dies or is, due to illness or any other reason, unable to continue to perform his functions, the Govt. may by notification in the official gazette, declare the office of a such member to be vacant and appoint thereto another person qualified to hold the office.

    তার মানে আইনেই বলা আছে, নতুন করা কোন কিছু শুরু করার দরকার নেই এবং সরকার একটা গেজেট নটিফিকেসানের মাধ্যমে নতুন বিচারক নিয়োগ দিয়ে পূর্ববর্তী বিচারক যেখানে শেষ করেছেন সেখান থেকে নতুন বিচারক বিচারকাজ শুরু করতে পারবেন। বাংলাদেশে অন্য সব বিচারকার্য এভাবেই হয়ে আসছে । তাহলে, মউদুদ, মাহবুব, জয়নাল-গং ইন্তারপ্রেতিসানের নামে যা করলেন সেটা স্রেফ মিথ্যাচার এবং আইনের অপব্যাখ্যা ।

    বিচার শুরু হওয়ার পর থেকেই মউদুদ, মাহবুব গংরা এটা বানচাল করার নানামুখী ষড়যন্ত্র আর মিথ্যাচারে লিপ্ত। দলের পা চাটা কুত্তা হিসেবে আর যাই হওয়া যাক, অন্তত স্বাধীন পেশাজীবী হওয়া যায়না।

    (এই গুরুত্বপূর্ণ লেখাটি লিখেছেনঃ Sabuz Paul)

  4. probirbidhan Avatar

    By Abu Sayeed Ahamed
    মগা মেম্বার, খগা মহুরী আর ইলাস্টিক চেয়ারম্যান
    ============================

    আমাদের গ্রামের মগা মেম্বার অত্যন্ত ভাল মানুষ। তিনি ভাল উদ্দেশ্যেই একটা জটিল বিচারের বিষয়ে পাশের গ্রামের খগা মহুরীর সাথে গোপনে টেলিফোনে আলাপ করতেন। কারণ প্রকাশ্যে আলাপ করা গ্রামের আইনে সহি ছিলনা।

    দোষী ব্যক্তিরা গোপন আলাপের কথা জেনে গেল। তারা মগা মেম্বার আর খগা মাস্টারের গোপন কথা গোপনে রেকর্ড করল। যখন মগা মেম্বার বিচারের রায় দেয়ার কাছাকাছি চলে এসেছেন তখন ঐ রেকর্ড করা কথা দোষীরা বাইরে ফাঁস করে দিল। এই গোপন রেকর্ড প্রকাশিত হওয়ায় শুধু মগা মেম্বার আর খগা মহুরীর বিশেষ অঙ্গই মাইনকা চিপায় আটকায় নাই, সাথে সাথে গ্রামবাসীর ঐ দোষীদের শাস্তি পাওয়ার দৃশ্য দেখার আশা ধূলিস্যাত হয়ে গেল।

    মগা মেম্বার আর খগা মহুরীর গোপন আলাপে খুব খারাপ কিছু পাওয়া গেলনা । যেটুকু পাওয়া গেল তা ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র সফল করবার জন্য যথেষ্ট। ঐ আলাপের সূত্রে জানা গেল যে খগা মহুরী শুধু মগা মেম্বারকেই উপদেশ দেয়না, মগা মেম্বারের পক্ষের গন্যমান্য মহল্লাবাসীকেও উপদেশ দেয়, কার কি করতে হবে আর বলতে হবে সেই বিষয়েও মাঝে মধ্যে জ্ঞানদান করে। বিচারে সময় কাকে রাখতে হবে আর কাকে বাদ দিতে হবে সেটাও মহুরী সাহেব বলে দেন। অথচ এই উপদেশ দেবার এক্তিয়ার বিজ্ঞ মহুরী সাহেবের নাই আর মেম্বার সাহেবর এই তরিকায় উপদেশ নেয়াও গ্রামের আইনে বৈধ নয়। ফলে দুইজন মিলে যা করলেন সেটা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং আইনগতভাবে লজ্জাস্কর।

    এই ঘটনা জানাজানি হবার পরে মেম্বার সাহেব পদত্যাগ করলেন। গ্রামের চেয়ারম্যান সাহেব গোপনে রেকর্ড করা ক্যাসেট বাজারে বাজানোর জন্য ক্যাসেট প্লেয়ারের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করলেন। তিনি ক্যাসেট, ক্যাসেট প্লেয়ারকেও নিষিদ্ধ ঘোষনা করলেন। কিন্তু যে মেম্বার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে এই ধরনের একটা চরম বেকুবি কাজ করলেন তার বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করলেন না।

    এখন প্রশ্ন হল চেয়ারম্যান সাহেব কেন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করলেন না? বিষয়টা খুবই পরিস্কার। গ্রামবাসী চায় অপরাধীদের দ্রুত বিচার এবং শাস্তির বাস্তবায়ন। কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেবের ইচ্ছা ভিন্ন। তিনি চান এই বিচারকে ইলাস্টিকে পরিণত করতে। তিনি যখন দরকার তখন যেন টেনে লম্বা করতে পারেন। আবার নিজ প্রয়োজনে লম্বা ইলাস্টিককে ছেড়ে দিয়ে সাইজমত ছোট করতে পারেন। তিনি তাই খগা মেম্বারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বিচারে মধ্যে আরেকটা ইলাস্টিক ঢুকিয়ে দিলেন। ফলে বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হলেও ইলাস্টিক কিন্তু মজবুত হল। এই বিচার ব্রান্ডের ইলাস্টিকের মজবুতি এবং যথাযথ ব্যবহারেই চেয়ারম্যানের ভবিষ্যত নির্ভর করছে। তাই গ্রামবাসীর ইচ্ছায় নয়, চেয়ারম্যানের ইচ্ছাতেই ইলাস্টিক লম্বা কখনও লম্বা হয়, কখনও বা হয় খাঁটো। কে জানে কতদিন ইলাস্টিক চেয়ারম্যানের তেলেসমাতি দেখে যাবে গ্রামবাসী!!!!

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

en_USEnglish
Powered by TranslatePress