এককথায় প্রশ্নটার উত্তর হলোঃ অন্যায়কারী কখনো ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনা।
জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার দাবীতে গতরাতে একটা পোস্ট করেছিলাম আমার WORDPRESS ব্লগে। পোস্টের শিরোনাম ছিল “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এখনই সুযোগ!” গোটা-বিশেক ছাগুর মন্তব্য পড়ে এখন জবাব দিচ্ছি। সহমতও জানিয়েছেন কয়েকজন। একদিনেই ১০,০০০ বারের বেশি দেখা হয়েছে ব্লগপোস্টটি!
এরা যেসব মন্তব্য করেছে সেগুলো কোন ঈমানদার মুসলমান বলতে পারে কিনা সেটা এখন একটা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানসিক বিকৃতির কারনে বড়জোড় ভাবতে পারে, কিন্তু প্রকাশ্যে কিভাবে বলে!
মানে ছাগুদের হাগু একটু টাইট হয়ে গ্যাছে আর কি… সেই ৫তারিখ থেকে শাহবাগের গদাম খেতে খেতে, আবার রাজীবকে খুন করার পরিণতি সামলাতে গিয়ে জানোয়ারগুলোর “মাথাই নষ্ট” অবস্থা, ঘুম হারাম। আর তাই অনৈসলামিক চিন্তা ও কাজ করতেও দ্বিধা হচ্ছেনা। রবিবার নাকি এরা হরতাল করবে, আতংক ছড়াবে! ঐসব বিচার-ফিচার বন্ধ করতে হবে, শাহবাগ খালি করে দিতে হবে, ধর্মব্যবসায়ি-রাজাকারদের মুক্তি দিতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। মারপিট করে, ডর-ভয় দেখিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-গনহত্যার ইতিহাস-ধর্ষনের ইতিহাসের দুয়ার বন্ধ করে রাখবে। এরা আমাদের আজন্ম শত্রু কারন এরা পাকিস্তান চেয়েছিল।
এদেরই একজন মো মহিদুল, যার ইমেইল আইডিঃ তিনি সোজা প্রশ্ন করলেন, “akta muslim country te ai nastik rajib ato din thakto kivabe?”
অনেক কথা মাথায় এসেছিল। এখনও আসছে। কিন্তু ধর্ম-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমি বরাবরই সাবধান। তাই “অকাট্য যুক্তি ছাড়া আর কিছু না বলাই ভালো” নীতিতে চলি আমি। তার উপর আবার অন্য একটি ধর্মের কিছু ভন্ডদের নিয়ে!
তাই জবাবে লিখলামঃ “bhai mohedul, muslim country bole onyo sob dhormer (o nastikder) manushke ki desh chharte hobe? QURAN-e kothae bola achhe je bhinyo dhormer o moter manushder khun korte hobe ba desh-chhara korte hobe?”
কয়েকজনকে বলতে দেখলাম আল্লাহর বিচারের কথা বলছেন, আবার নাস্তিকদের নির্মূলের ডাকও দিচ্ছেন। তারা আল্লাহর বিচারের অপেক্ষা না করে, নাস্তিক/বকধার্মিক/বিধর্মীদের শান্তির ইসলামের পথে আনার চেষ্টা না করে কতল করার দিকে ঝুঁকছেন। ভুল করছেন, এসব মনোভাব প্রকাশ করতে নেই এই যুগে। ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা করে যারা নিজেদের ব্যক্তিগত সুবিধা হাসিলের চেষ্টা করছেন তাদের নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।
বাংলাদেশী হিসেবে ১৯৭১-এর সত্য-মিথ্যা ও আর মুসলমান হবার কারনে ধর্মে শন্তি ও ন্যায়বিচারের গুরুত্বের কথা জেনেও এদের কয়েকশ ধর্ম(রাজনৈতিক)গুরুদের জীবন বাঁচানোর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য অধর্ম করে চলেছে অবিরাম। কারন এরা মানুষ হতে পারেনি, জন্মগতভাবে বাংলাদেশী ও মুসলমান হয়েছে, এবং এরা মানুষ হতে চায় না।
“আশরাফুল মাখলুকাত”-আর হতে পারলো না এরা। এদের জ্ঞান হোক, সততা ও মানবিকতা জাগ্রত হোক এসব ঘৃন্যপশুমনে।
একদিকে “জেহাদে”র অপব্যাখ্যা করে, “(সন্ত্রাসের) ইসলামকে ধ্বংস করা হচ্ছে” বলে গলা ফাটিয়ে আর অন্যদিকে টাকার বিনিময়ে বিদেশী রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এই পাগলা-কুত্তারা বাল-বাচ্চাসহকারে এখন রাস্তায় নেমেছে। ভাবছে তারা “গাঁটছাড়া দিয়ে” নেমেছে। সবাই হয়তো ভয়ে গর্তে ঢুকে যাবে! কেউ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি-জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবিতে পথে নামবে না। পত্রিকা-টিভিতেও লেখা হবেনা কোন খারাপ কথা। তাহলে ফতোয়া আসবে “গজব নামবে! এর পরও না থামলে সৃষ্টিকর্তার অপেক্ষা না করে নিজেরাই “বিচার” করবে সব রাজাকার-বিদ্বেষীদের যারা নাস্তিক-বিধর্মী-অধার্মিক আর (সন্ত্রাসের) ইসলামের শত্রু! এসব গুরুত্বপূর্ণ সবকাজে সাথে বিএনপি তো আছেই!
এরপর প্রশাসনে-সমাজে থাকবে শুধু তারা, তারা এদেশে সত্যিকারের (!) ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবে। যদিও ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকেও পারেনি। তারও আগে বন্ধবন্ধুর মৃত্যুর পর থেকে এদেশে রাজনীতি-ব্যবসা-সেনা ও অন্যান্য বাহিনী-ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়র-ধর্মগুরুর ডালপালা ছড়িয়ে দিয়েও পারেনি।
এদের কেউ কেউ আবার জীবনে কোনদিন বাংলা বইই পড়েনি। দর্শন-বিজ্ঞান-সমাজবিজ্ঞান-অর্থনীতি ইত্যাদি না পড়েই, আবার পড়লেও তা গভীরভাবে না করায় মর্মার্থ না বুঝেই, বিচার-বিশ্লেষন না করেই জীবনটা পার করে দিচ্ছে জানোয়ারের মত।
“আশরাফুল মাখলুকাত”-আর হতে পারলো না এরা। এদের জ্ঞান হোক, সততা ও মানবিকতা জাগ্রত হোক এসব ঘৃন্যপশুমনে।
জামায়াতের বুইড়া শয়তানদের পাশাপাশি ন্যাদা-প্যাদা শিবিরও “একগুঁয়ের” মত কিংবা অন্ধের মতো তাদের ধর্ম ও রাজনীতি শিক্ষকদের অনুসরন করে যাচ্ছে। এদের কাছে বেঁচে থাকা মানে পরিশ্রম ও জ্ঞানচর্চা করে জীবনটাকে নিজের মতো সাজিয়ে-গুছিয়ে নেয়া নয়; যেন শুধুই একটা ফরম্যাটে বেড়ে উঠা, অনুগত পোষা কুকুরটার মত সকাল-বিকাল ডানে-বামে যাওয়া — কোন কথা নয়, কোন প্রশ্ন নয়। এত্ত বড় সাহস! মুখে-মুখে কথা! আমি যা বলেছি তাই ঠিক, যেভাবে বুঝিয়েছি সেটাই সত্য, জীবনটা আমি তোদের আগে দেখেছি, যা বলছি তাই পড়, তাই শেখ, তাই পালন কর, এটাই করতে হবে তোকে।
ধর্মগুরু-সমাজপতি আর ঘরে গুরুজনের রক্তচক্ষুকে ভয় করেই হোক, মৌলিক কোন স্বার্থ, শারীরিক-মানসিক অক্ষমতার কারনে তৈরি হওয়া অনাগ্রহ থেকেই হোক বা হোক অন্য কোন দৈবিক বিষয়, কিছু মানুষ কখনোই এই চক্র থেকে “মুক্ত” হতে পারেনা। ফলে বয়স যতই বাড়ুক, এরা কখনো জ্ঞানী বা অন্তত সু-শিক্ষিত হতে পারেনা, মানুষ হতে পারেনা; একজন ভালো মুসলিম হবে কি করে?
“এদের জ্ঞান হোক, সততা ও মানবিকতা জাগ্রত হোক এসব ঘৃন্যপশুমনে।” তবে এত সুন্দর করে বললে তো আর এসব মাথামোটা পাগলা-কুত্তারা এমনি এমনি ভদ্র হবে না। মানুষ হবার টাইম-ওভার হয়ে গ্যাছে, অনেক সুযোগ ছিল, হাতছাড়া হয়েছে। এদেরকে এখন বাধ্য করতে হবে… মানবিকতাসম্পন্ন মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। তবে জামায়াত-শিবির ভাইদের ভয় নেই, এসব মানুষ যতই শিবিরদের সকাল-বিকাল নাস্তার কথা বলুক, যতই ধরে ধরে জবাই করার কথা বলুক, এরা তা করতে পারবেনা, ৫জন মিলেও পারবেনা।
ইচ্ছে করে, কিন্তু আমি নিজেও পারবো না। এদের সঠিক পথে যদি কেউ আনতে পারে তো পারবে শুধু রাষ্ট্রের আইনশৃংখলা বাহিনী। এটা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
এক্সট্রা ডোজঃ একাত্তরে দৈনিক সংগ্রামের খবরগুলো পড়লে আতঙ্ক নিয়ে আবিস্কার করবেন কিভাবে তারা বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ড ঘটাতে উস্কানি দিয়েছিলো। একইভাবে দৈনিক আমার দেশ তার জন্মলগ্ন থেকেই মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে আসছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিডিআর বিদ্রোহে উস্কানি, সেনা বিদ্রোহের উস্কানি দিয়েছে তারা। এবার দিলো সাম্প্রদায়িক দাঙার উস্কানি।
নূরানি চাপা সাইট চালু হয় রাজীব হত্যাকাণ্ডের পর
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার ওরফে থাবা বাবাকে নিয়ে জামায়াত-শিবির সমর্থক একদল অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। দৃশ্যত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সক্রিয় এমন একটি ওয়েবসাইটকে থাবা বাবার সাইট বলে তারা তাঁকে নাস্তিক সাব্যস্ত করার চেষ্টা করছে। রাজীব ফেসবুকেও ধর্মবিরোধী কথা লিখেছেন প্রমাণ করার জন্য ভুয়া স্ট্যাটাস তৈরি করে সেগুলোর স্ক্রিনশট এখন ছড়ানো হচ্ছে ফেসবুকে। এমনকি আনাড়ির মতো রাজীবের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের অ্যাডমিন এরিয়ার স্ক্রিনশটও একজন গতকাল রবিবার ফেসবুকে পোস্ট করেছে, যা শতভাগ ভুয়া।
অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে অতি উৎসাহে nuranichapa.wodpress.com সাইটটির লিংক শেয়ার করা হয়েছে। বিভিন্ন আইডি থেকে কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটের অনেক খবরের নিচেও এই লিংকটি স্পাম আকারে ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ওয়েবসাইট বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাকাস্টের দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, নূরানি চাপা নামের সাইটটি প্রথম ভিজিট হয় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজীব হত্যাকাণ্ডের দিন এবং লিংক ছড়িয়ে দেওয়ার ফলে ওই দিন মোট ভিজিটর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৭ হাজার ৭৮৩। ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে সাইটটি কেউ ভিজিট করেছেন এমন কোনো তথ্য কোয়ান্টাকাস্ট পায়নি।
এ ধরনের অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে পাল্টা পোস্টও দেওয়া হচ্ছে সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইটগুলোতে। শাহবাগ আন্দোলনের একজন লেখেন, ‘মূলত খুনের দায়কে এড়াতে জামায়াত-শিবির মেতেছে অপপ্রচারে। ফেসবুক-ব্লগে থাবা বাবার নামে একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে। এরপর থাবা বাবাকে নাস্তিক প্রমাণ করতে ইচ্ছেমতো যা-তা লেখা হচ্ছে।’ তিনি আরো লেখেন, ‘রাজীব খুন হওয়ার nuranichapa.wodpress.com নামে একটা পেজের আগমন ঘটে। এরপর ‘নূরানি চাপা সমগ্র’ নামে একগাদা লেখা পোস্ট করা হয়। যা থাবা বাবার লেখা বলে ওই সাইটে দেখানো হয়। কিন্তু থাবা বাবা খুন হওয়ার আগে এই সাইটে কোনো ভিজিটরকে সাইটটি প্রদর্শন করতে দেখা যায়নি।
‘নূরানি চাপা সমগ্র’ ভিজিটকারী এক ব্লগার জানান, ইন্টারনেটে নূরানি চাপার পেজটির source code ঘেঁটে দেখি www.quantcast.com-এর একটি লিংক দেওয়া আছে। সাইটটি বানানোর সময় কোয়ান্টাকাস্টের কোড ব্যবহার করা হয় কতজন ভিজিট করছে তা বোঝার জন্য। এতে দেখা যায়, ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে সাইটটি কেউ ভিজিট করেনি। ট্রাফিক বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাকাস্টে নূরানি চাপার লিংকটি হচ্ছে : www.quantcast.com/nuranichapa.wordpress.com রাজীবই নূরানি চাপা ব্লগটি চালাতেন- এ কথা প্রমাণ করার জন্য গতকাল রাজীবের ফেসবুকের অ্যাডমিন এরিয়ার একটি স্ক্রিনশট একজন শেয়ার করেন। স্ক্রিনশটে দেখানো হয়, রাজীব ‘নূরানি চাপা’ নামের একটি পেজ পরিচালনা করে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুক ব্যবহার করছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পেজের মালিক ছাড়া আর কারোর পক্ষে অ্যাডমিন এরিয়ার স্ক্রিনশট দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁদের মত হচ্ছে, কেউ হয় রাজীবের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, অথবা তাঁর পাসওয়ার্ড হ্যাক করে বিভ্রান্তিকর তথ্য জুড়ে দিয়েছেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.