৫ই মে’র ‘গনহত্যা’ নিয়ে লেখা অধিকারের Fact Finding Report-এর কাভার ফটোটা জামায়াতীদের বাঁশেরকেল্লার প্রোপাগান্ডা পোস্টারগুলোর মত আর বক্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে হেফাজতের প্রেস রিলিজ।
পড়ার ইচ্ছা হয় নাই আগে। কিন্তু এখন যখন সরকার কাজ শুরু করলো, অধিকারের সচিবকে গ্রেপ্তার করে মামলায় রিমান্ডে নিল, আশা করছি আরো কিছু রাঘব-বোয়ালকেও ধরা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে। আমাদের দেশের মাহমুদুর রহমানকেও দেরী করে ধরেছিলো সরকার।
যদিও আফসোস একটা আছেই, এসব কাজে আমাদের আইনশৃংখলা বাহিনী দক্ষ লোকের নির্দেশনা না পাওয়ায় ভুলভ্রান্তিতে ভরা থাকে একেকটা কাজ। ফলে বিরোধীরা আরেকটা মওকা পেয়ে যায়। যেখানে বেশিরভাগ মানুষের সমর্থন পাবার কথা, সেখানে লাঞ্ছনাই প্রাপ্য হয়ে যায়।
অধিকার একটি মানবাধিকার সংগঠন যাদের কাজ পত্রিকা-টিভিতে প্রকাশিত দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাওয়া লংঘনের ঘটনাগুলোকে অনুসন্ধানের পর যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট বানানো এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করা। এসব প্রতিবেদনে প্রাথমিক ধারনা, পরিস্থিতির বর্ননা, ফলাফল ও পরামর্শ সবই থাকে। ঝামেলাটা হলো কারা কি বিষয়ে কাজ করছে সেটা নিয়ে।
যেমন ধরুন অধিকারের এই রিপোর্টে তারা হেফাজতকে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে এর সাম্প্রতিক উত্থানপর্ব বর্ননা করেছে, কিন্তু ২০১০-১১ সালের কথা কিছু বলেনি। আবার হেফাজতের নেতা-কর্মীদের ক্রোধোন্মত্ত ভূমিকাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছে শাহবাগ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতরা ফেসবুক-ব্লগে ধর্ম ও নবীকে নিয়ে কটুক্তি-ব্যংগ করায় সমাজের সকল স্তরের মানুষ ক্রুদ্ধ হয়েছে। সময়টা ১৯শে ফেব্রুয়ারি থেকে। কারন তার কয়েকদিনের মধ্যে দৈনিক ইনকিলাব ও দৈনিক আমার দেশ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত নোংরা-জঘন্য ভাষায় লেখা কিছু জিনিস পত্রিকায় ছাপিয়েছে, শুধুমাত্র সাম্প্রতিক কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ সাড়া ফেলা শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে দেশের সহজসরল মুসলমানদের ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য। কারন তারা রাজাকারদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার তাড়া দিচ্ছে। ফলে ক্ষতি হচ্ছে জামায়াত-বিএনপির।
১৫ই ফেব্রুয়ারি রাজীবকে খুন করার কিছু সময়ের মধ্যে এই ব্লগ পোস্টগুলো পাওয়া যায় এমন একটা সাইটে যেটা সেদিনই খোলা হয়েছে। আর এসব খবর এসেছে ছাত্র শিবিরের ব্লগসাইট ও ফেসবুক পেজ থেকে।
অধিকারের রিপোর্টে ১৯তারিখের কথাটা বলাতে ভালোই হয়েছে , আমি রেকর্ড ঘেঁটে পাচ্ছিলাম না। আমি তথ্য পাচ্ছি ৮/৯ই মার্চ থেকে যখন চট্টগ্রামে সারাদেশের ইসলামী নেতাদের একটা ধর্মীয় সম্মেলনের কথা বলে আনা হয় এবং আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়। তের দফার সূত্রপাত হয় যেখানে ‘ব্লাগারদের ফাঁসি’ ছাড়াও আরো নানামূখী সন্দেহজনক দাবী দেখা যায়। যথারীতি, সমাবেশের সবাই এক হতে পারেননি। কিন্তু রক্তগরম করা ইস্যুতে লোকের অভাব হয়না। আর যখন সেই আলোচনার টেবিলে কয়েকজন ১৮-দলীয় জোটের নেতা ও আফগানিস্তানপন্থীরা থাকেন যারা আবার নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনের সাথেও জড়িত তখন সরকারবিরোধী আন্দোলনকে আর ঠেকায় কে। শাহবাগের অহিংস আন্দোলন কি করে অন্ধ-উগ্রপন্থীদের সামলাতে পারবে!
হাসি পাচ্ছে, অধিকার লিখেছে হেফাজতের মতে অন্যান্য ‘অরাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মত’ এরাও নাকি একটা জনগনের প্ল্যাটফর্ম। যেসব বিষয় ইসলামকে প্রভাবিত করে এমন বিষয় নিয়ে তারা কাজ করে! মুসলমানদের অধিকার রক্ষা তাদের অন্যতম লক্ষ্য!
কই যাই!!! ঃ@
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.