ক্ষুদ্রঋণ দাতা গ্রামীণ ব্যাংকসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা, সারাবিশ্বে আলোচিত নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন ডিপস্টেট তথা সরোস-ক্লিনটন-বিল গেটসদের বন্ধু মুহাম্মদ ইউনূসের চরিত্রের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো ছোটবেলা থেকেই মিথ্যা বলা, লোভ করা, কর ফাঁকি দেয়া, ষড়যন্ত্র করা, বিশ্বাসঘাতকতা করা, উপকারীর স্বীকৃতি না দেয়া, স্বেচ্ছাচারী মনোভাব, আত্মগরিমা এবং অন্যের উপর দোষ চাপানো।
English version: Yunus lied about his complicity in student protest to oust Hasina
কিন্তু ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে এনজিও ব্যবসা করা, নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করা এবং বিশ্বজোড়া পরিচিতির জন্য তিনি সুশীল সমাজের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে উঠেন এবং জীবনের বেশিরভাগ সময় নিজের অপকর্ম লুকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন।
চট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও মহাজন ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য দুলা মিয়া সওদাগরের নয় সন্তানের মধ্যে ইউনূস ছিলেন তৃতীয়। ছোটবেলায় জালিয়াতির মাধ্যমে কলিকাতা থেকে প্রকাশিত শুকতারা ম্যাগাজিনের সৌজন্য সংখ্যা পাওয়ার লোভে মিথ্যা তথ্য দিয়ে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। এছাড়া তার সুদখোর কিন্তু ধর্মভীরু বাবা মাঝেমধ্যে তার দোকানে বসতে বললে ইউনূস ক্যাশবাক্স থেকে টাকা সরাতেন এবং কোনদিন ধরা পড়েননি।
নিজের ব্যাংকার টু দ্যা পুওর বইয়ে গর্বের সাথে এই ঘটনাগুলোর কথা তিনি উল্লেখ করেছেন।
চারকোনা ফ্রেমের চশমা, সাদা দাড়ি-টুপি, পাজামা-পাঞ্জাবি ও সাদা জুতা পড়ে মসজিদে নামাজ পড়তেন দুলা মিয়া। স্বর্ণের গয়না বিক্রির পাশাপাশি গয়না বন্ধক নিয়ে মানুষকে সুদে টাকা ধার দিতেন।
এরকম দ্বিচারিতা দেখে বাবার মতোই প্রতারণা শিখে গিয়েছিলেন ইউনূস। যেমন, এই বইয়ে তিনি বলেছেন, তার বাবা নাকি সুদ দেয়া-নেয়া পছন্দ করতেন না। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকায় শিক্ষকতা করতে গিয়ে স্বদেশীদের সাথে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করলেও সে সময় তার ভাইয়েরা, বাবা দুলা মিয়া ও দাদা নজু মিয়া যে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে চট্টগ্রাম শহর ও হাটহাজারী এলাকায় বাঙালি নিধনে কাজ করেছিল, সেটি লেখার মতো সৎসাহস তার ছিলো না।
প্রকাশ্যে প্রগতিশীল, জনসেবক বা নারী উন্নয়নকর্মী হিসেবে পরিচিত হলেও, বাস্তবে তিনি খুবই আত্মকেন্দ্রীক, বদরাগী, মিথ্যাবাদী এবং এনজিওর মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা তছরুপের অন্যতম হোতা।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে জামায়াত-শিবিরের গোপন পরিকল্পনা ও অর্থায়নে পরিচালিত সরকারবিরোধী আন্দোলন, সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থান ও বিদেশী শক্তির সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা বনে যাওয়া ইউনূস গত আট মাসে ছাত্র-জনতার তথাকথিত গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ও ছাত্রনেতাদের সাথে তার সম্পৃক্ততা নিয়ে কয়েক ধরণের বক্তব্য দিয়েছেন।
এটিকে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হিসেবে দাবী করার পাশাপাশি তিনি এমনও বলেছেন যে, ৫ই আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের আগে মুক্তিযোদ্ধা কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোন ছাত্রনেতার সাথে তার পরিচয় ছিল না।
তবে তার মুখে চুনকালি মেখে কিছু ছাত্রনেতা বলেছে যে, তাদের সাথে ইউনূসের আগেই যোগাযোগ ছিল।
এরকম মিথ্যা বলা বা মুনাফেকী আচরণ সাধারণত জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। কারন এরা একাত্তরে গণহত্যার সাথে সম্পৃক্ত ছিল এবং প্রায় এক যুগ পর অন্য নামে রাজনীতি শুরু করে। আবার নিজেদের নেতাকর্মীদের দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন নামে সশস্ত্র জঙ্গী দল গঠন করে দেশবিদেশ থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে সেসব দলকে পরিচালনা করে জামায়াত-শিবির।
ফলে দেখা যায়, ১৯৯২ সাল থেকে জামায়াত-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠন কয়েক হাজার ছোট-বড় হামলা করে সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে এবং এসব ঘটনায় কখনও জামায়াত বা এর মিত্রশক্তির কেউ আহত বা নিহত হয়নি। সকল হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল মুক্তিযুদ্ধ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও শিল্প-সংস্কৃতি চর্চাকারী দল বা ব্যক্তি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, অমুসলিম এবং শিয়া ও আহমদীয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা।
ক্ষমতা গ্রহণের পর সেপ্টেম্বরে আমেরিকা সফরে গিয়ে বিল ক্লিনটনের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আনন্দের আতিশায্যে ইউনূস বলে বসেন যে, জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন হঠাৎ করে শুরু হয়নি, বরং খুব নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
কি বলেছিল ইউনূস?
সর্বশেষ জানুয়ারির শেষদিকে ফিনান্সিয়াল টাইমসের গিডিয়ন র্যাচম্যানের সাথে একটি পডকাস্টে কথা বলার সময় ছাত্রনেতাদের সাথে তার যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছিলেন ইউনূস। এমনকি তাদের কাউকে নাকি তিনি চিনতেন না, এমনটাও বলেছেন।
প্রশ্ন: সেই মুহুর্তে আপনি কোথায় ছিলেন?
ইউনূস: আমি প্যারিসে ছিলাম…
প্রশ্ন: তাহলে আপনি কীভাবে ফোন পেলেন এবং ফিরে এলেন?
ইউনূস: সেই দিন (৫ই আগস্ট) যখন প্রথম ফোন আসে, আমি কেবল একটি ছোট অপারেশনের জন্য হাসপাতালে ছিলাম। তারা ফোন করেছিল। আমি প্রতিদিন মোবাইল ফোনে খবর দেখছিলাম বাংলাদেশে কী ঘটছে। তারা বলেছিল যে, ‘সে (শেখ হাসিনা) চলে গেছে। এখন আমাদের একটা সরকার গঠন করতে হবে। দয়া করে আপনি আমাদের জন্য সরকার গঠন করুন।‘ উত্তরে আমি বললাম, না, আমি নই। আমি এ ব্যাপারে (সরকার) কিছুই জানি না এবং আমি এসবের সাথে জড়াতেও চাই না।
প্রশ্ন: কে আপনার সাথে যোগাযোগ করেছিল?
ইউনূস: ছাত্ররা। আমি এদের চিনি না। তাদের সম্পর্কে কখনও শুনিনি। কখনও তাদের চিনতাম না…
এখানে দেখা যাচ্ছে ছাত্রদের সাথে পরিচয় থাকার কথা তিনি দৃঢ়কন্ঠে অস্বীকার করলেন, যার একমাত্র কারন হতে পারে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের জন্য আইনি পদক্ষেপ এড়ানো।
এছাড়া তিনি সরকার ও রাষ্ট্র পরিচলাননা নিয়ে কিছু জানেন না বলে আরেকটি মিথ্যা দাবী করেন। উল্লেখ্য, একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় ইউনূস ছাত্র রাজনীতি করেছেন। এছাড়া সেনাসশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদের আমলে তিনি সরকারি নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন কমিটিতে সদস্য হিসেবে কাজ করেন।
পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালের ২৭শে আগস্ট ইউনূস “আমার দল” নামক রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনার কথা বলেন, তবে পরবর্তীতে আর আগাতে পারেননি।
১৯৯৬ সালের প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি একজন উপদেষ্টা নির্বাচিত হন। এছাড়া ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি জাতিসংঘ ও আমেরিকার প্ররোচনায় সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে ইউনূসকে অনুরোধ করা হয়। তিনি দায়িত্ব নিতে রাজী না হলেও পরের মাসে জরুরি অবস্থার মধ্যেই “নাগরিক শক্তি” নামক রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দেন। কিন্তু নানা কারনে মে মাসে তিনি সেই কার্যক্রমে ইস্তফা দেন।
তবে দুই বছর ক্ষমতা আকঁড়ে থাকা ফখরুদ্দীন-মঈনউদ্দীনের সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে আমেরিকার পরিকল্পনামাফিক আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে দুর্বল করা এবং জামায়াতসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী জঙ্গীদলকে মদদ দেয়ার বিষয়ে ইউনূস তখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির চাপে দ্রুত নির্বাচন দিতে বাধ্য হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথাকথিত সংস্কার ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মকান্ড মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় ফিরে এসে আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিলে ইউনূসসহ জামায়াত, উগ্রবাদী গোষ্ঠী, বিএনপি ও কট্টর বামপন্থীরা সরকারবিরোধী আন্দোলনে নামে এবং জ্বালাও-পোড়াওয়ের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
একই সময়ে সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ইউনূসকে অপসারণ করে তার দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করলে, তিনি সে সময়কার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের দ্বারস্থ হন। হিলারি তখন মার্কিন সরকার, সাবেক কূটনীতিক, ব্যবসায়ী ও ঢাকাস্থ দূতাবাসকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নেন।
এসব পদক্ষেপ শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করলেও সরকার পরিচালনায় নানাক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হওয়ায় এবং অদক্ষতার জন্য সমালোচিত ইউনূসকে এখনও সহযোগিতা করে চলেছে মার্কিন ডিপস্টেট বা সরোস-ক্লিনটন গ্যাং।
ইউনূসের মিথ্যাচার ধরা পড়লো যেভাবে
সম্প্রতি সরকারের একজন ছাত্র উপদেষ্টা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা বেশ কয়েকটি ফেসবুক পোস্টে তার মিথ্যাচারকে মিথ্যা প্রমাণ করেছেন।
ইউনূসের মস্তিষ্কপ্রসূত, প্রাক্তন ছাত্র সমন্বয়কারী এবং বর্তমানে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ১ আগস্ট সন্ধ্যায় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সাংবাদিক এবং রাইট টু ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক মুশফিকুল ফজল আনসারীর মাধ্যমে অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে প্রথম বার্তাটি পান।
আনসারী এর আগে ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর তাকে মেক্সিকোতে রাষ্ট্রদূত করা হয়েছিল।
মাসুদ ১৭ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভের মূল বিষয়গুলি সম্পর্কে তার বক্তব্য তুলে ধরেন, উল্লেখ করেন যে ছাত্র সমন্বয়কারীরা প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের ও আনসারী এবং অন্যান্য ব্যক্তি এবং আন্দোলনকে সমর্থনকারী বিভিন্ন প্রবীণ নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেন।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের ধাওয়ায় তারা উত্তরার কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতাল ছেড়ে একটি প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সংস্থার অফিসে আশ্রয় নেয় এবং মার্কিন দূতাবাসের সাথে যুক্ত মো. মুনতাসির রহমান, জুলকারনাইন এবং একজন সাংবাদিকের সহায়তায় তারা আশ্রয় নেয়। ওই অফিস থেকেই তারা ফেসবুকে প্রথম ভিডিও বার্তাটি দেয়। ইউনূসের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী এবং দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম পরের দিন গুলশানে তার বন্ধুর ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে তাদের থাকার ব্যবস্থা করেন।
আরেক সমন্বয়কারী এসএম শাহেদ ইমন বলেন, ইসলামী ছাত্র শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন সভাপতি আবু শাদিক কায়েমই প্রথম ব্যক্তি যিনি ২ বা ৩ আগস্ট ইমেলের মাধ্যমে নোবেল বিজয়ীর সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। ইমন একটি ফেসবুক পোস্টে বলেন, ইমেলটি ঢাবি শিবিরের সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে সভাপতি) এসএম ফরহাদ লিখেছিলেন।
বাংলা আউটলুক এবং আল জাজিরার তদন্ত দলের জন্য কর্মরত বরখাস্ত সেনা কর্মকর্তা জুলকারনাইন সায়েরও এক্স থ্রেডে সাদিক কায়েম এবং ইউনূসের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া ১৮ই আগস্ট ছাত্র বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠার পর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ও রাজাকার মুসা বিন শমসেরের ছেলে ববি হাজ্জাজ একটি টিভি টক-শোতে ইউনূসের সাথে যোগাযোগ করে তার সক্রিয় ভূমিকা চাওয়ার কৃতিত্ব স্বীকার করেন।
সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যটি এসেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়াঁর কাছ থেকে, যিনি সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টে বলেছেন যে ১লা আগস্ট ডিবি পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, তিনি বদিউল আলম মজুমদার এবং অধ্যাপক আলী রিয়াজের (দুটি সংস্কার কমিশনের প্রধান) সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। তারপর তিনি তার ব্যক্তিগত সহকারী – মঈন আহমেদ এবং শাব্বির আহমেদের মাধ্যমে ডঃ ইউনূসের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। আসিফ আরও বলেন যে পরে তিনি ২-৫ই আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন ডঃ ইউনূসের সাথে কথা বলেছিলেন।
সুশীল সমাজের নেতা বদিউল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং সিটিজেনস ফর গুড গভর্নেন্স (শুজান) এর প্রতিষ্ঠাতা-সচিব। সরকার পরিবর্তনের পর তিনি নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান হন।
অন্যদিকে, বাংলাদেশি-আমেরিকান আলী রিয়াজ ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও সরকার বিভাগের একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক। তিনি আটলান্টিক কাউন্সিলের একজন অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং বাংলাদেশি এনজিও, সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের সাথে যুক্ত। অধ্যাপক ইউনূস তাকে সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান করেছিলেন।
২০১৮ সাল থেকে ইউনূস সেন্টারে সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার শাব্বির এখন প্রধান উপদেষ্টার এপিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে, শিবিরের প্রাক্তন সভাপতি মির্জা গালিব, হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শাদিক কায়েম এবং এসএম ফরহাদ গত ছয় মাসে সংবাদপত্র এবং টিভিতে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে ভাগ করে নিয়েছিলেন। তবে, কোনও মূলধারার মিডিয়া তাদের সম্পর্কে খবর প্রকাশ করেনি।
গালিব বলেছেন যে তারা নয় দফা সনদ তৈরি করেছেন, এমন দাবিগুলি যোগ করেছেন যা সরকারের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন হবে, কারণ তারা জানতে পেরেছিলেন যে আওয়ামী লীগ কোটা ব্যবস্থা বাতিলের জন্য শিক্ষার্থীদের দাবিতে একমত হবে।
জামাতপন্থী আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি উপ-সম্পাদকীয়তে কায়েম প্রকাশ করেছেন যে কীভাবে তার উগ্র ইসলামপন্থী দল আন্দোলনকে সমন্বয় করেছিল এবং রাজধানীর ১০টি পয়েন্টে ক্যাডার মোতায়েন করেছিল যাতে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা যায়।
সরকার জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার দুই দিন পর থেকে বা ৩রা আগস্ট থেকে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের হত্যার ঘটনায় এদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
শিবির নেতা-কর্মীরা আন্দোলনের সময় কখনও তার রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করেনি; বরং, তারা বাংলাদেশের পতাকার স্বাক্ষরযুক্ত হেডব্যান্ড পরেছিল এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের জনপ্রিয় স্লোগানগুলি উচ্চারণ করেছিল। মূলধারার মিডিয়াও তাদের পরিচয় উল্লেখ করেনি, যদিও এটি সাংবাদিকতার একটি মৌলিক নীতি।
ফেব্রুয়ারিতে OHCHR তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশের পর, কায়েম একটি ফেসবুক পোস্টে বলেছেন যে তার দল ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, ছাত্র সমন্বয়ক এবং বর্তমানে নাগরিক পার্টির শীর্ষ নেতা সরজিস আলম বলেন, ছাত্রশিবির জুলাই-আগস্টের বিদ্রোহকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন করেছিল, রাস্তায় উপস্থিত থেকে এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে সহযোগীর ভূমিকা পালন করে।
আরেক ছাত্র সমন্বয়কারী আব্দুল কাদের, নয় দফা দাবি ঘোষণার মাধ্যমে আন্দোলনে শিবিরের ভূমিকা এবং কীভাবে এটি সরকার বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল সে সম্পর্কে মুখ খুলেছেন।
অন্যদিকে, নিষিদ্ধ চরমপন্থী গোষ্ঠী হিযবুত তাহরীর (এইচটি) এর মিডিয়া উইং প্রধান ইমতিয়াজ সেলিম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন যে তারা আন্দোলনের সময় তাদের পরিচয় গোপন রেখেছিলেন। শেখ হাসিনার পতনের পর, এইচটি জিহাদিরা ঢাকা এবং অন্যান্য জেলায় কালেমা পতাকাধারী শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে বিজয় মিছিল করে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.